Advertisement
E-Paper

‘স্তন্যপান করান শৌচালয়ে’, বিতর্কের ঝড়ে শপিং মল

কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের এক শপিং মলের বিরুদ্ধে এক মহিলার অভিযোগকে ভিত্তি করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে এই বিতর্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৭
সাহসী: মলয়ালম পত্রিকার প্রচ্ছদে স্তন্যপান করানোর এই ছবি ঘিরে শুরু হয়েছিল বিতর্ক।

সাহসী: মলয়ালম পত্রিকার প্রচ্ছদে স্তন্যপান করানোর এই ছবি ঘিরে শুরু হয়েছিল বিতর্ক।

সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইনে কেউ মন্তব্য করেছেন, কোলে সদ্যোজাত থাকলে কি শপিং মলে ঢোকা যাবে না! কেউ আবার তির্যক প্রশ্ন তুলেছেন, সন্তানের কত বছর বয়স হলে শপিং মলে যাওয়ার ছাড়পত্র পাবেন মা?

কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের এক শপিং মলের বিরুদ্ধে এক মহিলার অভিযোগকে ভিত্তি করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে এই বিতর্ক। মঙ্গলবার ফেসবুকে ওই মহিলা অভিযোগ করেন, দক্ষিণ কলকাতার ওই শপিং মলে সন্তানকে স্তন্যপান করাতে দেখে এক নিরাপত্তাকর্মী আপত্তি জানান। শৌচালয়ের ভিতরে ঢুকে স্তন্যপান করাতে হবে বলেও তিনি নির্দেশ দেন মহিলাকে।

অভিযোগ, ওই শপিং মলের সাইটে ঢুকে এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে মলের তরফে পাল্টা পোস্ট করে বলা হয়, বাড়ির কাজ শপিং মলে করার কথা নয়। কিন্তু এর পরেই মহিলার অভিজ্ঞতার কথা পড়ে বিতর্ক ছড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরে বিতর্কিত সেই পোস্টটি তুলে নিয়ে সেখানেই ক্ষমা চাওয়া হয় মলের তরফে।

আরও পড়ুন: অ্যাসিড-কাণ্ডে এখনও ধরা পড়ল না অভিযুক্ত​

চলতি বছরের শুরুতে একটি মলয়ালম পত্রিকায় স্তন্যপান করানোর ‘সাহসী’ ছবি তুলে ধরেছিলেন এক মডেল। তা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হলে স্তন্যপানের প্রয়োজনীয়তা ও সচেতনতা প্রসারেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সরকারি-বেসরকারি সমস্ত পক্ষই বছরভর স্তন্যপান নিয়ে নানা সচেতনতা কর্মসূচি চালায়। তার পরেও এই ঘটনা সচেতনতার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।

সন্তানকে স্তন্যপান করানোর সময়কালে মহিলারা কি তবে বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না, প্রশ্ন নারী আন্দোলনের কর্মী শাশ্বতী ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি স্তরে লাগাতার স্তন্যপান নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। অথচ বাস্তবে মহিলাদের শপিং মলের শৌচালয়ে গিয়ে স্তন্যপান করাতে বলা হচ্ছে। কেন বিলাসবহুল শপিং মলে এই ব্যবস্থা থাকবে না?’’ শৌচালয়ে গিয়ে মহিলাকে স্তন্যপান করানোর নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি শুধু অনৈতিক নয়, অস্বাস্থ্যকর বলেও জানালেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক ধৃতিমান রায়। তিনি বলেন, ‘‘শৌচালয়ে ঢুকে স্তন্যপান করানো উচিত নয়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।’’ এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা অমানবিক আচরণ। এমন নিয়ম থাকলে লিখিত দেওয়া উচিত। মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। যে কোনও উন্নত জায়গায় শিশুকে স্তন্যপান করানোর আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়। কোনও মহিলাকেই শৌচালয়ে গিয়ে স্তন্যপান করানোর নির্দেশ দেওয়া যায় না।’’

আরও পড়ুন: গাড়ির ধোঁয়াই শুধু নয়, ভোগাচ্ছে নির্মাণের দূষণও

এই বিতর্ক প্রসঙ্গে পরে ওই শপিং মল কর্তৃপক্ষ জানান, পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে। তবে মলের দ্বিতীয় তলে স্তন্যপান করানোর ব্যবস্থা আছে। শপিং মলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনমোহন বাগড়ি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মহিলার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। কোনও নিরাপত্তাকর্মীর দোষ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

Breastfeeding Controversy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy