Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Death by drowning

Death: মৃত ঘোষণার পরেও কি বেঁচে ছিল কিশোর, দাবি ঘিরে বিতর্ক

বারাসত মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ময়না-তদন্তের জন্য রাখা  হয়েছে বিনয়ের দেহ। ওই হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন,  ‘‘এখানে যখন কিশোরটিকে আনা হয়, তত ক্ষণে সে মারা  গিয়েছিল।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪৫
Share: Save:

জলে ডুবে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ওই কিশোরের পরিজনেরা জানান, তাকে জল থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তাঁদের দাবি, ছেলেটিকে বাড়িতে আনার পরে দেখা যায়, তার হাত নড়ছে। তখন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য একটি হাসপাতালে। সেখানেও অবশ্য কিশোরটিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতের ছোট জাগুলিয়ায়। দত্তপুকুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম বিনয় রায় (১৭)। তার বাড়ি কলকাতার সিআইটি রোডের কমলডাঙা এলাকায়। দিনকয়েক আগে ছোট জাগুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার হাটখোলায় মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল ওই কিশোর। তার মামা অমর রায় জানান, এ দিন সকালে তিনি যখন বাড়িতে ছিলেন না, তখন ওই ঘটনা ঘটে। অমর বলেন, ‘‘আমি টোটো চালাই। সকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্ত্রী ফোন করে জানান, পুকুরে স্নান করতে নেমে ভাগ্নে ডুবে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ফিরে ওকে নিয়ে ছোট জাগুলিয়া হাসপাতালে গেলে সেখানে ভর্তি না করেই ছেলেটাকে মৃত বলে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’

পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, কিশোরের পরিবারের দাবি, ব্লক হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসার পরে তাকে নড়াচড়া করতে দেখেন তাঁরা। সেই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়েরা। তাঁরা ব্লক হাসপাতালে চড়াও হলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

অমর বলেন, ‘‘ব্লক হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পরে ভাগ্নের হাত-পা ম্যাসাজ করি, মুখে ফুঁ দিই। তখনই দেখি, ওর হাত নড়ছে। ভাগ্নে বেঁচে আছে দেখে ওকে নিয়ে ফের বারাসত মহকুমা হাসপাতালে দৌড়ই। কিন্তু সেখানেও ভাগ্নেকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ছোট জাগুলিয়ার হাসপাতাল ওকে ভর্তি নিয়ে চিকিৎসা করলে হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেত।’’

এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, ছোট জাগুলিয়ার ওই ব্লক হাসপাতাল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান নুরুল হকও। তিনি বলেন, ‘‘ওই হাসপাতালে এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে। মাস দুয়েক আগে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত এক রোগীকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে তিন ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে ওই ব্যক্তি মারা যান। ব্লক হাসপাতালে কোনও রোগী গেলেই তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয়। আমরা জেলা প্রশাসনকে একাধিক বার এই সমস্যার কথা জানিয়েছি।’’

যদিও ছোট জাগুলিয়া ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) সৃঞ্জয় চন্দের পাল্টা দাবি, ওই কিশোরকে বাঁচানোর জন্য যা যা করা দরকার, সবই করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ওই কিশোরকে পরীক্ষা করেন। তার রক্তচাপ পরীক্ষা থেকে শুরু করে চেস্ট কমপ্রেশন-সহ প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার, সবই করা হয়েছিল। তার পরেও অবশ্য দেখা যায় যে, রোগী আর বেঁচে নেই। এই ধরনের ঘটনায় অনেক সময়ে ফুসফুসে জল জমে থাকে। তখন বুকে বা পেটে চাপ দিলে রোগীর দেহ নড়াচড়া করতে পারে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তিনি বেঁচে আছেন।’’

বারাসত মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ময়না-তদন্তের জন্য রাখা হয়েছে বিনয়ের দেহ। ওই হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানে যখন কিশোরটিকে আনা হয়, তত ক্ষণে সে মারা গিয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death by drowning Barasat controversy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE