Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
Corona

চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’, মৃত্যু করোনা রোগীর

গত বৃহস্পতিবার করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কাকলিদেবী। চিকিৎসক তাঁকে রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথা লিখে দিয়েছিলেন।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২১ ০৫:০৬
Share: Save:

হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সদের গাফিলতিতে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন পরিজনেরা। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার সকালে, কামারহাটির এক হাসপাতালে। অভিযোগ, সেখানকার চিকিৎসক, নার্স, আরএমও-দের বিভ্রান্তিকর কথার জেরেই ঠিক চিকিৎসা পাননি কাকলি সরকার (৪০) নামে ওই করোনা রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেও এ নিয়ে সুরাহা হয়নি। শেষে রবিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।

গত বৃহস্পতিবার করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কাকলিদেবী। চিকিৎসক তাঁকে রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথা লিখে দিয়েছিলেন। রোগীর ভাই জয়দীপ রাজের অভিযোগ, তা সত্ত্বেও হাসপাতালের এক আরএমও বলেন ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রোগীর পরিজনদের দাবি, চাপের মুখে তিনি এ-ও বলেছিলেন যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ওই ওষুধ দিতে বারণ করেছেন। এর পরে শনিবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় কাকলিদেবীর। সেই সময়ে মিনিটে ১৫ লিটার মাত্রায় অক্সিজেন চালিয়ে তা ওই রোগীকে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু অভিযোগ, তা চালানো হয় মিনিটে ৮ লিটার মাত্রায়।

পরিজনেরা এ নিয়ে প্রশ্ন তুললে ওই আরএমও জানান, হাসপাতালে এর চেয়ে বেশি মাত্রায় অক্সিজেন দেওয়া যায় না। অন্য দিকে নার্সের বক্তব্য, ১৫ লিটারেই চলছে অক্সিজেন। চিকিৎসক-নার্সের এমন আলাদা-আলাদা কথায় পরিজনেরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। এর পরে রোগীকে দেখতে গিয়ে জয়দীপেরা দেখেন, অক্সিজেনের অভাবে তাঁর হাতের আঙুল নীলচে হয়ে গিয়েছে। মেপে দেখা যায়, অক্সিজেন মাত্রা ৪০-এর নীচে নেমে গিয়েছে। তখনও আরএমও জানান, কাকলীদেবীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। রোগীর পরিজনেরা এর পরে চিকিৎসককে ফোন করে খবর দেওয়ার দাবি করলে তাঁদের জানানো হয় যে, এত রাতে তাঁকে ফোন করা যাবে না। অবশেষে রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ মারা যান কাকলিদেবী। জয়দীপবাবুর আক্ষেপ, ‘‘হাসপাতালের গাফিলতির জন্যই দিদি চলে গেল। ওর ছোট বাচ্চাটার কী হবে!’’

কাকলীদেবীর পরিজনেদের আরও অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে কথা বলতে গেলে তাঁরা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। এর পরেই ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে রোগীর পরিবার।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর মেলেনি। ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তবে যেহেতু চিকিৎসা সংক্রান্ত অভিযোগ, তাই যথাযথ জায়গায় জানিয়ে তদন্ত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Corona Coronavirus in West Bengal COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE