Advertisement
E-Paper

কোভিড ওয়ার্ডে ‘মুশকিল-আসান’ আক্রান্ত জেলাশাসক

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলাশাসকের বাংলোর কয়েক জন কর্মীও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৪১
হাসপাতালে তদারকিতে জেলাশাসক পি উলগানাথন। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে তদারকিতে জেলাশাসক পি উলগানাথন। নিজস্ব চিত্র

কথায় বলে, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে! নিজে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন সরকারি হাসপাতালে! এখন সেখানেই দিন-রাত এক করে রোগীদের দেখভাল করছেন জেলাশাসক।

শুধু নিজের দফতরে বসে কাজ করাটা মোটেই পছন্দ নয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথনের। সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই উন্নয়নমূলক কাজের তদারকি ও নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে নানা প্রান্তে ঘুরে বেড়ান তিনি। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নতুন করে তাঁর জ্বর আসেনি। অন্য উপসর্গও নেই। তিনি পুরোপুরি সুস্থ।

সেই উলগানাথন এখন আইসোলেশনের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে রোগীদের দেখভাল করছেন কোভিড ওয়ার্ডে। কার কী অসুবিধা হচ্ছে, প্রত্যেকের কাছে গিয়ে জানতে চাইছেন। বয়স্ক রোগীদের নানা সমস্যা মন দিয়ে শুনছেন। তার পরে চিকিৎসকদের বিস্তারিত জানিয়ে যা যা করণীয়, তা করাচ্ছেন। এক নার্সের কথায়, ‘‘সোমবার সকালে এক বৃদ্ধা খুব কাশছিলেন। স্যর শুনতে পেয়ে তাঁর কাছে গিয়ে সব শুনলেন। তার পরে বিভাগীয় প্রধানকে ডেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।’’

রোগীদের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের ভিডিয়ো কলে কথা বলানো হয়েছে কি না, প্রতিদিন তারও খোঁজ রাখছেন জেলাশাসক। রোগীদের সঙ্গে আড্ডাও দিচ্ছেন তিনি। তাঁদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছেন। রোগীদের বলছেন, ‘‘করোনাকে ভয় পেলে চলবে না। মনের জোর বাড়িয়ে সুস্থ হয়ে উঠতে হবে। চেষ্টা করলেই আমরা তা পারব।’’

এক চিকিৎসক বললেন, ‘‘জেলাশাসক এখানে ভর্তি হওয়ায় অনেক সুবিধাও হয়েছে। পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা ওঁকেই জানাচ্ছি। উনি ফোন করে সমাধান করে দিচ্ছেন কয়েক ঘণ্টায়।’’ এক রোগীর কথায়, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম,

উনি বড় কোনও চিকিৎসক। পরে জানলাম, উনি জেলাশাসক। কিন্তু ওঁর চলাফেরা বা কথাবার্তায় তা বোঝাই যাচ্ছিল না। ওঁকে দেখার পরে মনে হচ্ছে, একটু নিয়ম মেনে চললে করোনাকে আমরাও হারাতে পারব। উনি সারা দিন কথা বলে আমাদের উজ্জীবিত করছেন। একেবারে বন্ধু হয়ে গিয়েছেন।’’

আজ, মঙ্গলবার, জেলাশাসকের ফের করোনা পরীক্ষা হবে। তার পরে রিপোর্ট দেখে তাঁকে ছাড়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘জেলাশাসকের বাংলোর কয়েক জন কর্মীও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাই জেলাশাসকের পরবর্তী রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তিনি স্বচ্ছন্দে বাড়ি ফিরতে পারবেন।’’

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোভিড রোগীদের ভর্তি করার জন্য জেলাশাসকের উদ্যোগেই এম আর বাঙুর হাসপাতালে আলাদা একটি ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছিল। নিজে সেই কাজের তদারকি করেছিলেন।’’ হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর বলেন, ‘‘উনি এসে যে ভাবে রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সবাইকে উজ্জীবিত করে কাজ করছেন, তা দেখে আমরা অভিভূত।’’

South 24 Parganas District Magistrate Coronavirus COVId-19 Treatment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy