Advertisement
E-Paper

পুর বাজারই জতুগৃহ, দেখে এলেন কর্তারা

পানীয় জল আছে। এমনি ব্যবহারের জন্যও জলের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই। আলাদা কোনও জলাধারও নেই। বেসরকারি কোনও বাজারের নয়, এই হাল কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ এন্টালি মার্কেটের। যা দেখে হতভম্ব দমকল দফতরের আধিকারিকেরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৪৮
পরিদর্শন: এন্টালি বাজার ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক কর্তারা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন: এন্টালি বাজার ঘুরে দেখছেন প্রশাসনিক কর্তারা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

পানীয় জল আছে। এমনি ব্যবহারের জন্যও জলের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য জলের কোনও ব্যবস্থাই নেই। আলাদা কোনও জলাধারও নেই। বেসরকারি কোনও বাজারের নয়, এই হাল কলকাতা পুরসভার অধীনস্থ এন্টালি মার্কেটের। যা দেখে হতভম্ব দমকল দফতরের আধিকারিকেরাও।

জলের ন্যূনতম ব্যবস্থা ছাড়াই কী ভাবে বছরের পর বছর ওই বাজারটি চলছে, সে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা। দমকলের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, নম্বরের ভিত্তিতে এন্টালি মার্কেটের অভ্যন্তরীণ অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা কার্যত শূন্য! যদিও পুর কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, সেখানে সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাগড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষিতে শহরের বাজারগুলির অগ্নি-সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। পুর আধিকারিকদের পাশাপাশি দমকল, সিইএসসি এবং পুলিশের প্রতিনিধিরাও সেই দলে রয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁরা এন্টালি বাজারে যান।

কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের সামনের রাস্তা জুড়ে হকারদের দখলদারি। ফলে আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢোকা বা বেরোনোর কোনও রাস্তাই নেই। নেই জলের জন্য রিজার্ভারের ব্যবস্থাও। অথচ, বাজারে দোকানের সংখ্যা প্রায় ৭০০। তার উপরে বাজারের একাধিক গেট থাকলেও সেগুলির যা অবস্থান, তাতে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে শুধুমাত্র এক প্রান্তের লোকই বেরোতে পারবেন। অন্য প্রান্তের লোকজনের দ্রুত বেরোনোর জন্য গেটের কোনও ব্যবস্থা নেই। ঘুরে ঘুরে সমস্তটাই দেখেন পরিদর্শক দলের সদস্যেরা।

এ দিকে, নিজেদের বাজারেরই যদি এ অবস্থা হয়, তা হলে বেসরকারি বাজারের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে কী ভাবে তাঁরা কড়াকড়ি করবেন, সে প্রশ্ন উঠেছে পুর প্রশাসনের অভ্যন্তরে। পুর বাজারের পরিদর্শন নিয়েও এ দিন প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, শহরের বিভিন্ন বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ইতিহাস বলছে, বেসরকারি বাজারগুলিই জতুগৃহ হয়ে রয়েছে। সেগুলির উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সেখানকার অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণাও নেই পুরসভার। ফলে বেসরকারি বাজারে না গিয়ে নিজেদের বাজারে যাওয়ার কী অর্থ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুর বাজারগুলিতে তো আমাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। কিন্তু সমস্যার মূল জায়গাটা তো বেসরকারি বাজার। সেগুলির সম্পর্কে তো সেই অর্থে কোনও তথ্যই নেই আমাদের কাছে।’’

যদিও এন্টালি বাজার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়ে গেল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কারণ, নিজেদের বাজারে সন্তোষজনক ব্যবস্থা থাকবে, এমনটা আন্দাজ করেই সেখানে গিয়েছিলেন পুরকর্তারা। সেখানকার অবস্থাই যে এমন বেহাল, তেমনটা বোধহয় আন্দাজ করতে পারেননি কেউই। পুর প্রশাসনের একাংশের এ-ও বক্তব্য, শুধু এন্টালিই নয়, এ রকম চিত্র অন্য পুর বাজারগুলিরও।

এ দিনের পরিদর্শন নিয়ে দমকল দফতরের আধিকারিক অয়ন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা বাজার ঘুরে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা তেমন দেখতে পাইনি। জলের ব্যবস্থাও চোখে পড়েনি। দমকলের তরফে জলের ব্যবস্থা ও ঢোকা-বেরোনোর জন্য আর একটি গেট তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে। বাজার কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন করবেন বলে।’’ যদিও পরিদর্শনের সময়ে উপস্থিত পুরসভার বাজার দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ আমিরুদ্দিন ববি বলেন, ‘‘সমস্ত ব্যবস্থাই রয়েছে। যেটুকু খামতি রয়েছে, তা করে দেওয়া হবে। আমরা মেয়রের নির্দেশমতো প্রথমে নিজেদের বাজারগুলি ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে বেসরকারি বাজারের অবস্থা দেখা হবে।’’

পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন একাধিক বাজার ঘুরে দেখার কথা থাকলেও এন্টালি বাজার দেখেই অভিযান শেষ করে পরিদর্শক দল।

Corporation Kolkata Municipal Corporation Fire
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy