Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩

প্রোমোটারকে ফ্ল্যাট ফেরত দিতে নির্দেশ

অবসরকালীন সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ বসু। আশা ছিল, ফ্ল্যাট হাতে পেলেই সেখানে উঠে যাবেন। কিন্তু মাঝপথে প্রোমোটার জানিয়ে দেন, চুক্তি-দামের চেয়ে বেশি টাকা না পেলে তিনি ফ্ল্যাট দেবেন না।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০৫
Share: Save:

অবসরকালীন সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ বসু। আশা ছিল, ফ্ল্যাট হাতে পেলেই সেখানে উঠে যাবেন। কিন্তু মাঝপথে প্রোমোটার জানিয়ে দেন, চুক্তি-দামের চেয়ে বেশি টাকা না পেলে তিনি ফ্ল্যাট দেবেন না।

Advertisement

রবীন্দ্রনাথবাবু মামলা করেন। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে রাজ্য ও জাতীয় ক্রেতাসুরক্ষা আদালত প্রোমোটারকে নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে রবীন্দ্রনাথবাবুকে ফ্ল্যাটের চাবি, হেনস্থার জন্য ক্ষতিপূরণ এবং মামলার খরচ দিতে হবে।

বেলেঘাটার ৫২, হরমোহন ঘোষ লেনের দোতলায় ৭২৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনতে চেয়ে ২০১০ সালের ৩১ মে প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন ফুলবাগানের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী রবীন্দ্রনাথ বসু। ফ্ল্যাটের দাম ধার্য হয় সা়ড়ে ১৪ লক্ষ টাকা।

চুক্তি মতো ফ্ল্যাটের চাবি পাওয়ার কথা ছিল ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু ২০১১ সালের মাঝামাঝি প্রোমোটারের একটি চিঠি তাঁকে হতবাক করে দেয়।

Advertisement

রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, ‘‘চুক্তির সময় দাম ধার্য হয়েছিল প্রতি বর্গফুট দু’হাজার টাকা। কিন্তু প্রোমোটার তাঁর চিঠিতে লেখেন, ‘‘ফ্ল্যাট তৈরির নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বর্গফুটে অতিরিক্ত পাঁচশো টাকা দিতে হবে। না হলে ফ্ল্যাট দেওয়া যাবে না।’’ এই চিঠি পেয়ে হতাশ হয়ে
পড়েন রবীন্দ্রনাথবাবু।

এর পর ফুলবাগানের ভাড়াটে সন্তানহীন বসু দম্পতি প্রোমোটারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে
রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে
মামলা করেন।

চার বছর পরে আদালতের দুই বিচারক সমরেশপ্রসাদ চৌধুরী ও মৃদুলা রায় বলেন, ‘‘দীর্ঘ চাকরি জীবনের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। কিন্তু প্রোমোটারের লোভের জন্য
বৃদ্ধ দম্পতি টানা ছ’বছর মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন।’’

আদালত নির্দেশ দেয়, প্রোমোটারকে এক মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট, ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন লক্ষ টাকা এবং মামলার খরচ বাবদ দশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন প্রোমোটার সুখময় চৌধুরী। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারপতি বি সি গুপ্ত এবং এসএম কানিতকার তাঁদের রায়ে রাজ্য ক্রেতা আদালতের নির্দেশই বহাল রাখেন।

অগত্যা প্রোমোটার বলেন, ‘‘আদালতের রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাইনি। তবে আদালতের রায় মেনে নেব। ক্ষতিপূরণের টাকা-সহ ফ্ল্যাট রবীন্দ্রনাথবাবুকে দিয়ে দেব।’’

রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ আসছে। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। জাতীয় ক্রেতা আদালতের এই রায়ের পর আশা করি, আগামী দিনে প্রোমোটাররা আর প্রতারণা করার পথে হাঁটবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.