Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Bowbazar

Bowbazar: বৌবাজারে ৯টি বাড়ির ফাটল বিপজ্জনক: রিপোর্ট

বৌবাজারের বাড়িগুলিতে যে-ভাবে ফাটল ধরেছে, তার সঙ্গে তিন বছর আগেকার ঘটনার মিল আছে বলেও রিপোর্টে পুরসভাকে জানিয়েছে যাদবপুরের অধ্যাপকেরা।

সরানো হচ্ছে ধ্বংসাবশেষ, বৌবাজারে।

সরানো হচ্ছে ধ্বংসাবশেষ, বৌবাজারে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৬:১১
Share: Save:

নিজেদের সমীক্ষায় বৌবাজারের আটটি বাড়ির স্বাস্থ্য নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষায় বিপজ্জনক ফাটলওয়ালা বাড়ির সংখ্যা আরও একটি বেড়েছে। ওই অঞ্চলে মেট্রোর কাজ চলাকালীন যেখানকার বাড়িতে ফাটল ধরেছে, সেখানে মোট ১৮টি বাড়িতে সমীক্ষা চালিয়ে যাদবপুরের অধ্যাপকেরা ন’টি বাড়ির ফাটল বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছেন। তিন বছর আগের বিপর্যয়ে ২৩টি বাড়ি ভেঙেছিল ওই এলাকায়।

এ বার বৌবাজারের বাড়িগুলিতে যে-ভাবে ফাটল ধরেছে, তার সঙ্গে তিন বছর আগেকার ঘটনার মিল আছে বলেও রিপোর্টে পুরসভাকে জানিয়েছে যাদবপুরের অধ্যাপকেরা। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) বার করে আনার জন্য খোঁড়া চৌবাচ্চার সমান্তরালে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনের ১৬, ১৬/১ এবং ১৯ নম্বর বাড়িতে প্রশস্ত ফাটল তৈরি হয়েছে।

ওই অংশে প্রায় ৪০ মিলিমিটার পর্যন্ত মাটি বসে যাওয়ার ফলে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা (কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএল)-র সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করবেন বলে জানান কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম।

মূলত পাঁচটি বিষয় মাথায় রেখে সমীক্ষা চালিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। মূলত বিচার্য ছিল: ১) দুর্গত এলাকার বাড়িগুলির ক্ষতির মাত্রা নির্ণয়, ২) কী ভাবে ওই ক্ষয়ক্ষতির প্রভাব কমানো যায়, তা যাচাই করা, ৩) যে-সব বাড়ি ভেঙেছে, সেগুলির পুনর্নির্মাণের পথ সন্ধান, ৪) এলাকায় মাটির নীচে থাকা জলের পাইপলাইন এবং পয়ঃপ্রণালী কী ভাবে স্বাভাবিক করা যায়, তা নির্ধারণ, ৫) সুড়ঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু হলে তার কোনও প্রভাব পড়বে কি না। ওই এলাকায় আরও নিবিড় পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, মেট্রোর সামগ্রিক নির্মাণকাজের কতটা কী প্রভাব ভবিষ্যতে পড়তে পারে, তা নির্ণয় করার জন্য সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ হওয়া প্রয়োজন।

ওই এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে রিপোর্টে। চুনসুরকির তৈরি বাড়িগুলির ফাটল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওই ফাটল সাম্প্রতিক। মাটির নীচে থেকে জল উঠে এসে বাড়ির ভিতের তেমন ক্ষতি না-করলেও বাড়িগুলিতে ফাটল ধরেছে বলে জানানো হয়েছে।

দুর্গা পিতুরি লেনের প্রায় ১৭০ বছরের পুরনো বেশির ভাগ বাড়িতেই তিন মিলিমিটারের বেশি ফাটল ধরেছে। কোথাও কোথাও ওই ফাটল ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত চওড়া। সেই সব ফাটলের অভিমুখ বিচার করে দেখা গিয়েছে, সেগুলো মেট্রোর টিবিএম বার করার চৌবাচ্চার সঙ্গে সমান্তরাল। বাড়িগুলিতে ব্যবহৃত চুনসুরকির মিশ্রণের কাঠিন্য এবং কড়ি-বরগার শক্তি বিচার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বিশদ ভাবে পরীক্ষা চালানোর জন্য ভিত পরীক্ষা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE