পাঁচশো-হাজারের নোটে মুরগি মিলছে না হাওড়ায়। — দীপঙ্কর মজুমদার
কে বলবে মাছের বাজার? অন্য দিন সকাল ৯টায় গোরাবাজারের মাছের দোকানে পা রাখা যায় না। আর শুক্রবার সুনসান। পাইকারি বাজার থেকে বড় তোপসে এনেছিলেন বিক্রেতা আনন্দ সাহা। খদ্দেরের দেখা না পেয়ে, বাজারেই পাইকারি দরের থেকে কিছুটা বেশি দামে আর এক ব্যবসায়ীকে বিক্রি করেন। তাঁর কথায়, দু’দিনে বিক্রি কমে গিয়েছে। ঘরে মাছ রেখে কী লাভ!
একই দৃশ্য লেক মার্কেট থেকে গড়িয়াহাট বাজার, মানিকতলা থেকে টালিগঞ্জ। বুধবার থেকে বাজার পড়ছিল। শুক্রবার যেন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। দু’দিন বাজারে ৫০০-র নোট ভাঙিয়ে দিয়ে অনেকে কিছু লাভ করতে পেরেছিলেন। এ দিন দেখা গেল, তাতেও যেন দম হারিয়েছে শহর। আজ-কাল শনি ও রবিবার ভাল ব্যবসার দিন। কিন্তু মানুষের পকেটে এখনও পর্যাপ্ত জোগান না আসায় চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।
বাঁশদ্রোণী সুপার মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী বাবু দাস বলছেন, কয়েক দিনে ব্যবসা প্রায় অর্ধেক। ৩০০ টাকার মাছ কিনলে এত দিন ৫০০-র নোট ভাঙিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মানুষের পকেটেই এখন টান পড়েছে। বাজারে আসবে কী করে!
মুদিখানা থেকে সব্জি বাজার, একই হাল। ৫০০ টাকা নিয়ে এলে মুদিখানায় কমপক্ষে ৪০০ টাকার জিনিস কিনতে হচ্ছে। ফলে সে সব দোকানও ফাঁকা। এ দিন শহরের অধিকাংশ সব্জি বাজারেই বেশি দোকান বসেনি। ছোট ব্যবসায়ীরা ২-৩ হাজার টাকার সব্জি আনেন। এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাতিল নোট না নেওয়ায় বিক্রেতারাও বিপাকে।
বারাসত থেকে দমদমে রোজ অন্তত হাজার আটেক টাকার সব্জি নিয়ে আসেন শঙ্কর ঘোষ। এ দিন খান ২০ ফুলকপি, সিম, কচু ছাড়া বিশেষ কিছু মেলেনি। তাঁর কথায়, সবাই ব্যাঙ্কে ছুটছেন, বাজার করবেন কখন। পাইকারি বাজার থেকে জিনিস কিনেও লাভ হচ্ছে না।
মুদিখানার মালিকেরা জানাচ্ছেন, বড়বাজার থেকে মাল আসছে না। কারণ বাতিল ৫০০, ১০০০ সেখানে চলছে না। ফলে দোকানে বহু জিনিসের টানাটানি।
এক কথায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ব্যবসায়ীরা। আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে শুক্রবারও প্রায় সব এটিএম বন্ধ থাকা। আজ, শনিবার সব এটিএম চালু হলেও ক’জন টাকা তুলতে পারবেন তা নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহান্তের বাজার ফাঁকা যাবে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy