Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Death

জন্মদিনের আলো লাগিয়ে নিখোঁজ, দেহ মিলল পুকুরে

বাঁশদ্রোণীর সত্যজিৎ পার্ক লাগোয়া এলাকায় মৃত্যুর এই ঘটনা ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

বাবলু চৌধুরী।

বাবলু চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

বাড়িতে পাঁচ বছরের মেয়ের জন্মদিন পালন হচ্ছে ঘটা করে। অথচ, বাড়ির এক সদস্যই নিখোঁজ। তাঁর খোঁজে এলাকা চষে ফেলেছেন বড়রা। থানাতেও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। কেক কাটা, জন্মদিন পালন করবে কী, শিশুমনও খুঁজে বেড়াচ্ছে বাড়ির সেই সদস্যকে। বার বার বড়দের সে বলছে, ‘‘ছোড়দা কখন আসবে?’’ সেই ছোড়দাই আবার তাকে কথা দিয়েছেন, জন্মদিনে সাইকেল কিনে দেবেন। তাই তাকে ভুলিয়ে রাখতে বাড়ির লোকজন বলছিলেন, ‘‘ছোড়দা কাজে গিয়েছেন। ফিরলেই তোমাকে নিয়ে সাইকেল কিনতে যাবেন!’’ কিন্তু ছোড়দা ফেরেননি। ২৪ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পরে বুধবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া পুকুর থেকেই উদ্ধার হয়েছে নিখোঁজ সেই ব্যক্তির মৃতদেহ!

বাঁশদ্রোণীর সত্যজিৎ পার্ক লাগোয়া এলাকায় মৃত্যুর এই ঘটনা ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। পুলিশ আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু কী কারণে এই মৃত্যু, তা স্পষ্ট হয়নি বুধবার রাত পর্যন্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বাবলু চৌধুরী ওরফে হাদু (৪০)। ওই এলাকাতেই তাঁর বাড়ি। ছোটবেলাতেই বাবা-মাকে হারিয়েছেন তিনি। বড় হয়েছেন মাসির বাড়িতে। হাদুর সঙ্গে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে একই পাড়ার বাসিন্দা প্রভাস মণ্ডলের। তাঁর আলোর ব্যবসা দেখাশোনা করতেন হাদু। প্রভাসের বাড়িতেই থাকতেন। তাঁরই বছর পাঁচেকের নাতনির জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার। সেই উপলক্ষে সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত আলো দিয়ে বাড়ি সাজাচ্ছিলেন হাদু। কিন্তু পরদিন ভোর থেকেই আর তাঁর খোঁজ মিলছিল না। মঙ্গলবার বাঁশদ্রোণী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। বুধবার ভোরে বাড়ি লাগোয়া পুকুর থেকে উদ্ধার হয় হাদুর মৃতদেহ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দ্রুত দেহটি উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে হাদুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ দিন প্রভাসদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজন। প্রভাসের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল দাস বললেন, ‘‘হাদু আমাদের বাড়িতে বহু দিন ধরে ছিলেন। দাদার মতোই দেখতাম। সোমবার অনেক রাত পর্যন্ত আলো লাগাবেন বলে আমাদের শুয়ে পড়তে বলেন। ভোরে উঠে আর ওঁকে দেখিনি।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘নেশা যে করতেন, তা আমরা জানি। সেই অবস্থায় ছাদ থেকে বাড়ি লাগোয়া পুকুরে পড়ে যান কি না, কে জানে!’’

বাড়ির গায়ে লাগানো আলোর চেন তখনও খোলা হয়নি। দেওয়ালের গায়ে ঝুলছে বেলুন। যার জন্মদিন, সে কী বলছে? কোনওমতে কান্না থামিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘মেয়ে এখনও ছোড়দার অপেক্ষা করছে। ফিরে এলেই সাইকেল কিনতে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death banshdroni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE