গঙ্গার ঘাটে বসে গল্প করছিল দ্বাদশ শ্রেণির দুই পড়ুয়া। আচমকাই জলে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটার চেষ্টা করতেই ঘটল বিপত্তি। ভাঁটার টানে তলিয়ে গেল এক জন। আর বন্ধুকে ভেসে যেতে দেখে প্রাথমিক চেষ্টায় বাঁচাতে না পেরে চম্পট দিল আরেক জন। খবর পেয়েই গঙ্গায় ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে ঘাটের জেটির ভাঙা অংশের নিচ থেকেই ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বালির জেটিয়া ঘাটে। মৃতের নাম জয়দীপ হাজরা (১৭)। বালি নর্থ ঘোষপাড়ার বাসিন্দা জয়দীপ বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ছিল। পুলিশ জানায়, এ দিন বালি ব্রিজের নিচের ওই গঙ্গার ঘাটে পরিত্যক্ত জেটির উপরে বসে জয়দীপ ও তার এক বন্ধুকে আড্ডা মারতে দেখেন স্থানীয়েরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, দেড়টা নাগাদ জয়দীপের ওই বন্ধু প্রথমে জলে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতে শুরু করে। তাঁকে দেখে জয়দীপও স্কুলের পোশাক খুলে জলে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু জলের স্রোতের টানে সে ভেসে যেতে থাকে। জয়দীপকে ভেসে যেতে দেখে ওই বন্ধু বাঁচানোর চেষ্টা করলেও জলে স্রোতের টান থাকায় ব্যর্থ হয় সে। এর পরেই তলিয়ে যায় বালি নর্থ ঘোষপাড়ার বাসিন্দা ওই বালক।
পুলিশ জানিয়েছে, জয়দীপকে তলিয়ে যেতে দেখেই চম্পট দেয় তার বন্ধু। স্থানীয়েরা বালি থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘাট থেকে একটি স্কুল ব্যাগ উদ্ধার করে। জয়দীপের স্কুলের পোশাক ছাড়াও বইপত্র ও একটি পাসপোর্ট ছবি মিলেছে। পরিচয় জানতে পেরে পুলিশ জয়দীপের বাড়িতে খবর দেয়। তার বাবা, মা ও পরিজনেরা এসে ব্যাগ, পোশাক শনাক্ত করেন। পুলিশ স্থানীয় ডুবুরি বীরেন কর্মকারকে তল্লাশি করতে গঙ্গায় নামায়। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা তল্লাশিতেও কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। পরে রিভার ট্রাফিক পুলিশের ডুবুরিরা এসে সাড়ে চারটে নাগাদ উদ্ধার করে জয়দীপের দেহ। তার বাবা হরি হাজরা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘‘আমার ছেলে সাঁতার জানত না। কিন্তু তা-ও জলে নামল কেন, বুঝতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy