E-Paper

অবৈধ বাজি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ক্লাস্টারের দাবি, তবে কাজ ঢিমেতালেই

রাজ্য জুড়ে বাজি কারখানায় পর পর দুর্ঘটনার পরেও হাড়ালে বেআইনি বাজি তৈরি বন্ধ হয়নি। শনিবারই এলাকায় প্রকাশ্যে শব্দবাজি তৈরির ছবি চোখে পড়েছে।

সমীরণ দাস 

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৮
কবে ক্লাস্টার তৈরি হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে হাড়ালের বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ।

কবে ক্লাস্টার তৈরি হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে হাড়ালের বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। —ফাইল চিত্র।

চম্পাহাটিতে বাজির ক্লাস্টার তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে, তাতে কবে ক্লাস্টার তৈরি হবে বা আদৌ হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে হাড়ালের বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। ক্লাস্টার চালু না হলে, অবৈধ বাজি কারবারেও নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।

রাজ্য জুড়ে বাজি কারখানায় পর পর দুর্ঘটনার পরেও হাড়ালে বেআইনি বাজি তৈরি বন্ধ হয়নি। শনিবারই এলাকায় প্রকাশ্যে শব্দবাজি তৈরির ছবি চোখে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে বাজি তৈরি চলছে বলেও অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রের খবর, হাড়ালে ছোট-বড় প্রচুর কারখানা রয়েছে। সেখানে নিয়মিত বাজি তৈরি হয়। এ ছাড়া, বহু মানুষ বাড়িতেও বাজি তৈরি করেন। বেশির ভাগেরই বাজি তৈরির শংসাপত্র নেই বলে অভিযোগ। এ ভাবে বাজি তৈরিতে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়মও মানা হয় না। নিয়ম অনুযায়ী, একসঙ্গে ২৫ কেজির বেশি মশলা নিয়ে বাজি তৈরির কথা নয়। সেখানে অনেকেই কুইন্টাল-কুইন্টাল মশলা একসঙ্গে নিয়ে কাজ করেন। লাভ বাড়াতে আরও নানা অনিয়ম চলে। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে।

বৈধ বাজি ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারি নজরদারিতে ক্লাস্টারে এক ছাদের নীচে কাজ হলে সেই আশঙ্কা থাকবে না। বাজি তৈরি থেকে শুরু করে বিক্রি— পুরো প্রক্রিয়া গ্রাম থেকে সরিয়ে ক্লাস্টারের অধীনে আনার পরিকল্পনা হয় বছর পাঁচেক আগে। হাড়াল থেকে কিছুটা দূরে চম্পাহাটি পঞ্চায়েত এলাকায় জায়গা নির্দিষ্ট হয়। সেখানে বাজি বিক্রয় কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরুও হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৩০০টি দোকান তৈরির কথা। কিছু দোকানের কাজ চলছে। এখনও বহু কাজ বাকি। তা ছাড়া, উৎপাদন কেন্দ্র বা কারখানা-সহ অন্যান্য জায়গা তৈরির কাজ শুরুই হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, কিছু ব্যবসায়ীর শুধু বিক্রি এবং কয়েক জনের উৎপাদন ও বিক্রির শংসাপত্র আছে। ক্লাস্টার হলে যাঁর যেমন শংসাপত্র আছে, সেই অনুযায়ী তিনি জায়গা পাবেন। সরকারি নজরদারিতে কাজ হবে।

বাজি তৈরি ও বিক্রির শংসাপত্র প্রাপ্ত ব্যবসায়ী অর্জুন মণ্ডল বলেন, “সরকার প্রতিশ্রুতি দিল। জমি নিল। কিন্তু কাজ শেষ করছে না। ক্লাস্টার না হলে এলাকায় লুকিয়ে-চুরিয়ে বাজি তৈরি চলতেই থাকবে। কোথাও কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। আমাদের এ ভাবে লুকিয়ে কাজ করার কথাই নয়। এটা একটা শিল্প। আর পাঁচটা শিল্পের মতোই নিয়ম মেনেই বাজি কারখানাও চলার কথা। প্রশাসন শিল্প বাঁচাতে উদ্যোগী হোক।”

ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, ক্লাস্টার তৈরিতে বাধা দিচ্ছে এলাকারই কিছু মানুষ। কারণ, নিয়ম মেনে বাজি তৈরি শুরু হলে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ কারবার বন্ধ হয়ে যাবে। প্রশাসনকেও তারা প্রভাবিত করছে বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের একাংশের আরও দাবি, চম্পাহাটিতে শুধু বিক্রয় কেন্দ্র রেখে উৎপাদন কেন্দ্র তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। সে ক্ষেত্রে দক্ষিণের রাজ্য থেকে আমদানি করা বাজির উপরেই ভরসা করে থাকতে হবে।

যদিও প্রশাসনের দাবি, বাজি ক্লাস্টার তৈরির ব্যাপারে তারা বদ্ধপরিকর। বিক্রয় কেন্দ্র, উৎপাদন কেন্দ্রের কাজ চলছে। বারুইপুরের মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন বলেন, “বাজি ক্লাস্টারের কাজ পরিকল্পনা মতোই এগোচ্ছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Firecrackers Green Firecrackers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy