Advertisement
০৮ মে ২০২৪

ডেঙ্গি: সল্টলেকে শুক্রবার থেকে চালু পুর অভিযান

ভোটের সময়েই ডেঙ্গি রোগে মৃত্যু হয়েছিল বছর পাঁচের এক শিশুর। পাশাপাশি সল্টলেক থেকে রাজারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বাড়ছিল। হুঁশ ফেরেনি তখ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ২০:০৭
Share: Save:

ভোটের সময়েই ডেঙ্গি রোগে মৃত্যু হয়েছিল বছর পাঁচের এক শিশুর। পাশাপাশি সল্টলেক থেকে রাজারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় জ্বরের প্রকোপ বাড়ছিল। হুঁশ ফেরেনি তখনও।

পুজোর ছুটির পরে একদিকে নিজেদের সমীক্ষার রিপোর্ট অন্যদিকে বৃহস্পতিবার জ্যাংরায় এক মহিলার মৃত্যুতে টনক নড়ল বিধাননগর পুরনিগমের। বৃহস্পতিবার বিশেষ জরুরি বৈঠকে আপৎকালীন একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিল পুরনিগম। দশটি মেডিকেল ক্যাম্প, রাজারহাট এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য প্রশিক্ষিত মশা তাড়ানোর বাহিনী, সচেতনতার প্রসার নিয়ে একাধিক পরিকল্পনা নিল পুরনিগম। আজ, শুক্রবার থেকেই চালু হবে সেই সব পরিকল্পনা।

বুধবার রাতে বাগুইআটির জ্যাংরা এলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কৌশল্যা রায় নামে এক বছর পঞ্চাশের এক মহিলার মৃত্যু হয়। তাঁর স্বামী বীরেন রায় জানান, কৌশল্যাদেবীর ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। প্লেটলেট ৪০ হাজারের নিচে নেমে যায়।

পুরসভা সূত্রের খবর, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছিল। সেই তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায়, ৪১ হাজার বাড়ির মধ্যে ৪০৪টি বাড়িতে লার্ভা মিলেছে। সেগুলির মধ্যে অধিকাংশই এসি মেশিন, ফ্রীজ, ফুলের টব, বাগানে জমা জল, পরিত্যক্ত ডাবের খোলা, টায়ারে লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। এ দিন পর্যন্ত বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ৬৭ জন রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। প্রাথমিক পরীক্ষায় এঁদের মধ্যে অনেকেরই ডেঙ্গি রোগের উপসর্গ মিলেছে। তবে মৃত্যুর কোনও খবর নেই।

তবে তথ্য থাকলে কী হবে, পরিকাঠামোর বেহাল দশা নিয়ে রীতিমত বিড়ম্বনায় পড়েছে প্রথম পুরবোর্ড। বিশেষত, এ দিনের বৈঠকে প্রাক্তন রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিকাঠামোর বেহাল দশার কথাও আলোচনায় উঠে আসে। যদিও সে সব নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন পুরনিগমের কর্তারা। তাঁদের দাবি, অযথা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। মশা বাহিত রোগ হচ্ছে, তবে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছে বা তাতেই মৃত্যু ঘটছে এই ধরণের তথ্য সঠিক নয়। এখনও পর্যন্ত পুরনিগমের হিসেবে ডেঙ্গি রোগে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১ জনের।

মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, আপাতত রাজারহাট এলাকার ২৭টি ওয়ার্ডে ৭ দিনের জন্য মশা তাড়ানোর কর্মসূচী সম্পর্কে প্রশিক্ষিত ১০০ জন কর্মীকে পাঠানো হবে। সল্টলেকের ১৪টি ওয়ার্ডের জন্য থাকবেন ৩৮ জন কর্মী। এ ছাড়া নতুন করে ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সাতদিন বাদে রাজারহাটে পাঠানো হবে।

এ ছাড়া দু-তিনটি ওয়ার্ড পিছু একটি করে মোট দশটি মেডিকেল ক্যাম্প করা হচ্ছে। দুটি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই কাজে সহযোগিতা করছেন।

তবে সবেচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সচেতনতার প্রসারে। লিফলেট, ব্যানারের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে, প্রতিটি বাড়িতে মানুষকে সচেতন করতে যাবেন পুরকর্মীরা।

তবে ডেঙ্গির প্রকোপের কথা স্বীকার না করলেও জ্বরের সংক্রমনের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন পুরনিগমের কর্তারা। পাশাপাশি বিধাননগর মহকুমা হাসপাতাল, বিধাননগর মাতৃসদনেও রক্তপরীক্ষা থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।

এ দিনই বিধাননগর পুরনিগমের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি মেডিকেল ক্যাম্প চালু হয়েছে। সকাল থেকে প্রায় ৩০ জন বাসিন্দা জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য সেই ক্যাম্পে যান।

পাশাপাশি বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালেও চালু হয়েছে বিশেষ মেডিকেল ক্যাম্প। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরে কার্যত মশা বাহিত রোগের প্রকোপের কথা স্বীকার করেছে বরাহনগর পুরসভা। তাঁদের দাবি, পাড়ায় পাড়ায় ব্লিচিং ছড়ানো, মশার তেল স্প্রে করার কাজ হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue mosquito salt lak city
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE