চলছে বিপজ্জনক যাত্রা। ছবি: অরুণ লোধ।
ডায়মন্ড হারবার রোড কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। কিন্তু এখানে গাড়ি চলে নৌকার মতো দুলে দুলে। কারণ, পিচ উঠে গর্তে ভরে গিয়েছে এই রাস্তা। যে কোনও মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা। রাস্তাটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে শুরু করে পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা। তবে তাঁদের দাবি, এই সমস্যা সাময়িক। শীঘ্রই সমাধান হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য এই আশ্বাসে আর আস্থা রাখতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, সারা বছর ঝুঁকি নিয়ে চলাটাই এখানে দস্তুর হয়ে গিয়েছে। বর্ষা এলে সেই সমস্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
খিদিরপুর থেকে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত বিস্তৃত এই রাস্তার একটা বড় অংশ গিয়েছে বেহালার উপর দিয়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ রক্ষা করে রাস্তাটি। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা বছর এই রাস্তায় গাড়ির চাপ থাকে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা এই রাস্তায় লেগেই থাকে বলে এলাকার কর্তব্যরত ট্রাফিক কর্মীরা জানান।
সখেরবাজারের বাসিন্দা সমীর রায় বলেন, ‘‘পুর প্রতিনিধিদের সমস্যার কথা জানালে তাঁরা বলেন মেট্রো কাজের জন্য এই দুর্ভোগ। কাজ শেষ হয়ে গেলে রাস্তার সমস্যা আর থাকবে না।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেহালা ট্যাঁকশাল থেকে জোকা পর্যন্ত রাস্তা খন্দে ভরা। বর্ষায় সেই সব অংশগুলি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাসিন্দারা জানান, ফুটপাথের অধিকাংশই থাকে হকারদের দখলে। কিন্তু বেহাল দশার জন্য রাস্তা দিয়েও হাঁটা যায় না।
স্থানীয় পুর প্রতিনিধিরা জানান, রাস্তাটি পুরসভার নয়। দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। মেট্রোর
কাজের জন্য রাস্তাটির এমন হাল হয়েছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি রাস্তা সারাইয়ের কাজ শুরু হবে। ১৩ এবং ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান যথাক্রমে মানিক চট্টোপাধ্যায় এবং সুশান্ত ঘোষ জানান, জোকা পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য ডায়মন্ড হারবার রোডের এই হাল হয়েছে। আমরা মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। ডায়মন্ড হারবার রোড সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে বলে দুই চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করেন।
ডায়মন্ড হারবার রোড দেখভালের দায়িত্ব পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশনের। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার রোডের মাটির ধারণ ক্ষমতা খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। যার জন্য এই রাস্তার খোল নলচে বদলে সারাই করতে হবে। যে কাজের জন্য রাজ্য সরকার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে বলে পূর্ত দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান।
পূর্ত দফতরের আধিকারিদের দাবি, সেই কাজে বাদ সেধেছে বর্ষা। তাঁরা জানান, আপাতত ‘প্যাচ ওয়ার্ক’ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। বর্ষা থামলে শুরু হবে পুরোদমে রাস্তা সংস্কারের কাজ।
পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশনের এগ্জিকিউটি ইঞ্জিনিয়ার শুভাশিস হালদার বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার রোডের সমস্যা আমাদের নজরে এসেছে। আমার ওই রাস্তার সংস্কার নিয়ে আলোচনাও করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy