Advertisement
০১ অক্টোবর ২০২৩
operation

কিশোরীর গলা থেকে বেরোল সাড়ে তিন কেজির টিউমার

গলার বেশ খানিকটা অংশ কেটে, প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের টিউমার বার করে ওই কিশোরীর মুখে হাসি ফোটালেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা।

কিশোরীর গলার বাঁ দিক মারাত্মক রকম ফুলে যায়।

কিশোরীর গলার বাঁ দিক মারাত্মক রকম ফুলে যায়। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪৬
Share: Save:

বছর দুয়েক আগে আচমকাই কিশোরীর গলার একটি অংশে লেবুর মতো ফোলা দেখা গিয়েছিল। বিষয়টিতে তেমন আমল দেননি পরিজনেরা। কিন্তু সমস্যা গুরুতর আকার নেয় মাস আটেক আগে। গলার বাঁ দিক মারাত্মক রকম ফুলে যায়। তার ভারে কিশোরীর মুখও এক দিকে বেঁকে যেতে থাকে। অবশেষে গলার বেশ খানিকটা অংশ কেটে, প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের টিউমার বার করে ওই কিশোরীর মুখে হাসি ফোটালেন এসএসকেএমের চিকিৎসকেরা।

বিহারের বাসিন্দা, বছর চোদ্দোর আজমিরা খাতুন নবম শ্রেণির পড়ুয়া। বুধবার পিজি হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের শয্যায় বসে সে জানায়, প্রথমে যখন লেবুর মতো ছোট আকারে গলা ফুলেছিল, তখন স্থানীয় হোমিয়োপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করিয়েছিলেন পরিজনেরা। কিন্তু কাজ হয়নি। এর পরে ধীরে ধীরে গলা আরও ফুলতে শুরু করে। আচমকাই সেটি মারাত্মক রকম ফুলে যায়। আজমিরার মা জালাইসা বিবি বলেন, “তখন খুব ভয় পেয়ে যাই। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, মেয়ের গলায় টিউমার হয়েছে। তার পরে কলকাতায় আসি।’’ তিনি জানাচ্ছেন, শেষ ছ’মাস ধরে মাঝেমধ্যেই এই রাজ্যে এসে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে আজমিরার চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। কিন্তু সকলেই প্রায় আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। জালাইসা জানান, মাস তিনেক আগে ফের আসেন তাঁরা। সেই সময়ে আচমকাই আজমিরার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন পরিজনেরা তাঁকে নিয়ে আসেন এসএসকেএমে।

সেখানে নাক-কান-গলা বিভাগে আজমিরার গলায় ট্র্যাকিয়োস্টোমি করে স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিভাগের বরিষ্ঠ শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, “মারাত্মক বিপজ্জনক ভাবে টিউমারটি গলা ও ঘাড়ের অংশে ছিল। অস্ত্রোপচার খুব ঝুঁকির ছিল। কিন্তু না করেও উপায় ছিল না।’’ হেড অ্যান্ড নেক শল্য চিকিৎসক সৌরভ দত্ত জানান, টিউমারটি শ্বাসনালিকে এক পাশে ঠেলে দিয়েছিল। মেরুদণ্ডের সঙ্গেও লেগে ছিল ওই মাংসপিণ্ড। তাঁর কথায়, “হৃৎপিণ্ড থেকে যে ধমনীর মাধ্যমে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালিত হয়, সেটি ঘিরে রেখেছিল ওই টিউমারটি। কোনও ভাবে ওই ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়ে বড় বিপদ ঘটতে পারত।’’ পরীক্ষায় জানা যায়, টিউমারটি হল স্নায়ুর টিউমার। সম্প্রতি সৌরভ-সহ চিকিৎসক হর্ষ ধর, পৌলোমী সাহা, সন্দীপন নস্কর, কামরান আহমেদ, অনিমেষ ঘোষ ও অ্যানাস্থেটিস্ট শ্রীপূর্ণা মণ্ডলের দল প্রায় ছ’ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারটি করেন। আজ, বৃহস্পতিবার আজমিরাকে ছুটি দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE