Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে ফেসবুকে ডাক্তাররা

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গির কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা নেই। তাই সচেতনতাকে হাতিয়ার করেই সংক্রমণ রুখতে হবে।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৩

অজানা জ্বর আর ডেঙ্গি নিয়ে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি কাটাতে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে এগিয়ে এলেন এ শহরের চিকিৎসকদের একাংশ।

বাগবাজার থেকে বেহালা— শহরের প্রায় সমস্ত এলাকাই এখন ডেঙ্গিপ্রবণ। প্রতি দিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেও শয্যা না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গির কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা নেই। তাই সচেতনতাকে হাতিয়ার করেই সংক্রমণ রুখতে হবে। চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’-এর সদস্য-চিকিৎসকেরা সোমবার সকালে ইউটিউবে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ওই ভিডিওকে তাঁরা ‘কথ্যচিত্র’ বলছেন। পনেরো মিনিটের সেই ভিডিওয় ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি ওই রোগের খুঁটিনাটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো হয়। ইউটিউব ছাড়াও ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপ-সহ একাধিক সোশাল মিডিয়ায় দু’দিন ধরে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে।

চিকিৎসকদের একাংশ জানান, যে রোগের নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তা নিয়ে অনেক সময়ে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ডেঙ্গি নিয়ে এমনই নানা ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হচ্ছে। যেমন অনেক জায়গায় অভিযোগ উঠেছে, রক্তের নমুনা পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়লে কিছু ভুল ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন একাংশের অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী। তাই সাধারণ মানুষকে ডেঙ্গি সম্পর্কে সচেতন করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। আবার রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়লেই আক্রান্ত মারা যাবেন, এই ধারণাও ভুল। কারণ, নির্দিষ্ট ওষুধ না থাকলেও বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ নিরাময় সম্ভব।

ডেঙ্গি সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করছে রক্তের আকালও। জ্বরে আক্রান্ত হলেই অনেকে প্লেটলেটের জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু সব জ্বরে প্লেটলেট দেওয়ার দরকার হয় না। এমনকী, ডেঙ্গি হলেই যে প্লেটলেট দিতে হবে, এমনটাও ঠিক নয়। তবে, আক্রান্তকে পর্যবেক্ষণে রাখা জরুরি। তা হলে প্রয়োজন মতো প্লেটলেট দেওয়া যেতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্লেটলেটের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত ভুল ধারণার জেরে চাহিদা বাড়ছে। ফলে অনেক জায়গা থেকে প্লেটলেটের বেআইনি বিক্রির খবর আসছে। এই বেআইনি বিক্রির জেরে প্লেটলেটের জোগান কমছে। যাঁদের চিকিৎসার জন্য সত্যিই প্লেটলেট জরুরি, এই সমস্যার জেরে তাঁরাই অনেক সময়ে প্লেটলেটের আকালে ভুগছেন।

ফোরামের সম্পাদক, চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘যে রোগের ওষুধ নেই, প্রতিরোধের পরিকল্পনাই সেই রোগ রুখতে পারে। রাজ্য জু়ড়ে অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। তৈরি হচ্ছে রোগ সংক্রান্ত নানা ভ্রান্ত ধারণা। তাই চিকিৎসক হিসেবে নিজেদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। এখন অসংখ্য মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার রাস্তা হল সোশ্যাল মিডিয়া। তার মাধ্যমেই মানুষের কাছে ডেঙ্গি সংক্রান্ত বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা তুলে ধরার চেষ্টা চলছে।

তবে, বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখা ও জল জমতে না দেওয়ার পাশাপাশি বাসিন্দাদের এই রোগ সম্পর্কে সচেতন করার দায়িত্বও পুর প্রশাসনের। কিন্তু, জানুয়ারি মাস থেকে লাগাতার প্রচারের দাবি করলেও পুরসভাগুলিকে এ বছরও ডেঙ্গি-যুদ্ধে পরাস্ত হতে হয়েছে। তার উপরে প্রশাসনের ডেঙ্গির তথ্য চেপে যাওয়ার প্রবণতাও এখানে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে।

যদিও ফোরামের আর এক সদস্য কৌশিক লাহিড়ী বলেন, ‘‘এই প্রচারের কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। মানুষ কয়েক মাস ধরেই এই সমস্যায় ভুগছেন। তাই চিকিৎসকদের দায়বদ্ধতা থেকেই ফোরাম এগিয়ে এসেছে।’’

Dengue doctor Facebook
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy