আজ, সোমবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে শব্দদূষণ সংক্রান্ত মামলা হওয়ার কথা। তার আগে পরিবেশকর্মীদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি শব্দদূষণ প্রতিরোধ কমিটি প্রসঙ্গে। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে দূষণরোধে গাফিলতির অভিযোগ থাকে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধেই, সেখানে এই কমিটির প্রাসঙ্গিকতা কোথায়?
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শব্দদূষণ রুখতে কমিটির পুনর্গঠন করা হয়েছে। তাতে রাজ্যের মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল, রাজ্য পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব, পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সদস্য-সচিব ও পর্ষদের ‘সিনিয়র সায়েন্টিস্ট’ রয়েছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরিবেশকর্মী মহলের বক্তব্য, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের নিয়ে কমিটি গড়ে কি দূষণ রোধ করা সম্ভব? পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত জানাচ্ছেন, শব্দযন্ত্রে সাউন্ড লিমিটর লাগানো বাধ্যতামূলক হলেও প্রশাসনই সাউন্ড লিমিটরহীন শব্দযন্ত্রে ছাড়পত্র দিচ্ছে। কখনও আবার তা বাজানো হলে ইচ্ছাকৃত ভাবে অগ্রাহ্য করছে। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি কমিটি শব্দদূষণ রোধে সরকারি ব্যর্থতা স্বীকার করবে কি?’’ শব্দদূষণ সংক্রান্ত মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘শব্দবিধি লঙ্ঘিত হওয়ার নেপথ্যে পুলিশ-প্রশাসনেরই হাত থাকে। অভিযোগ পেয়েও পদক্ষেপ করতে চায় না অনেক সময়ে। শব্দদূষণ নিয়ে নজরদারি কী করে করবে?’’
যদিও প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘এই কমিটি রাজ্য সরকার নিজে তৈরি করেনি। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ পালন হয়েছে মাত্র।’’
২০১৯-এর নভেম্বরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে রাজ্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। চলতি মাসে সেই কমিটির পুনর্গঠিত হয়েছে। পরিবেশকর্মীদের দাবি, শব্দদূষণ রোধে পরিবেশ আদালতের নির্দেশগুলি বাস্তবায়িত হলে অনেকটাই দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যেত। কিন্তু তা হয়নি। তাই সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটি কতটা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করবে, সংশয়ে পরিবেশকর্মীরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)