Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
ভোগান্তির বাইপাস

ত্রুটি পরিকল্পনায়, মেট্রো হলেও রাস্তায় জট থাকবেই

পরিকল্পনা না করে তড়িঘড়ি কাজ শুরু করে দেওয়াতেই ই এম বাইপাসের দফারফা হয়ে গিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন রেল ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। তাঁদের মত, অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ওই রাস্তায় বারবার ঠোক্কর খাবে যানবাহন।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৫ ০০:৩৮
Share: Save:

পরিকল্পনা না করে তড়িঘড়ি কাজ শুরু করে দেওয়াতেই ই এম বাইপাসের দফারফা হয়ে গিয়েছে, এমনটাই মনে করছেন রেল ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। তাঁদের মত, অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ওই রাস্তায় বারবার ঠোক্কর খাবে যানবাহন।

রেল সূত্রের খবর, নিয়মানুযায়ী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার আগে সমীক্ষা করা হয়। তার পরে কী ভাবে কাজ করা হবে, তৈরি হয় তার নক্শা। তার অনুমোদন মিললে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর নির্মাণ কাজ চালু করার আগে সমীক্ষাটাই ঠিক মতো করা হয়নি বলে রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের অভিযোগ। আর পরিকল্পনাবিহীন ভাবে কাজ চালু হওয়াতেই বাইপাসে যানবাহন চলাচল নিত্যই থমকে যাচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

কাজ চালু করার আগে কী কী দেখা উচিত ছিল?

রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য,

১) এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা না আটকে কী ভাবে কাজ করা সম্ভব, সেটি খতিয়ে দেখে তার সঠিক পরিকল্পনার দরকার ছিল।

২) রাস্তার কোনও এক দিকে বা মাঝখানে (ডিভাইডারে) স্তম্ভ বসানো উচিত ছিল, (এ ক্ষেত্রে স্তম্ভ রাস্তার মাঝেই বসানো হচ্ছে।)

৩) রাস্তার মাঝে কোনও বাধা তৈরি করা ঠিক হয়নি (স্টেশন তৈরির জন্য যেটা করা হয়েছে)।

ওই ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, বাইপাসের অভিষিক্তা, মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি এবং সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের কাছে তৈরি হচ্ছে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের তিনটি স্টেশন। এক দিকে রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া, অন্য দিকে ওই সব নতুন স্বল্প পরিসরের রাস্তায় ভারী গাড়ির চাপে তৈরি হওয়া গর্ত, দুইয়ে মিলে বাইপাস নিত্যই প্রবল যানজটের কবলে।

বস্তুত, এক দিকে নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোর কাজ, অন্য দিকে পরমা উড়ালপুলে একটি অংশের কাজ- দুইয়ের চাপে গোটা বাইপাসের নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। রেলের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের অভিযোগ, তার জেরে ৬০ ফুট চওড়া বাইপাস এখন এঁদো গলি। গত তিন বছর ধরেই বাইপাসের মাঝ বরাবর অনেকটা অংশ মেট্রোর দখলে। নানা জায়গায় টিন দিয়ে ঘিরে কাজ চলছে। মেট্রোর স্টেশন করার জন্য মূল রাস্তার মাঝখান দিয়ে যে ভাবে পরপর স্তম্ভ তুলে শহরের অন্যতম মূল রাস্তা ই এম বাইপাসের গতি ও অভিমুখ আটকে দেওয়া হয়েছে, তা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঠেকানো যেত বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ।

তাঁদের আরও অভিযোগ, শুধু এই প্রকল্পটিই নয়, তখন কিছু না ভেবেই রাজ্যের নির্বাচনকে সামনে রেখে তড়িঘড়ি অনেক রেল প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে সমীক্ষা ঠিক ভাবে না হওয়ায় যা হওয়ার তাই হয়েছে। গত তিন বছর ধরে বাইপাসে যাত্রীদের নাভিশ্বাস ওঠার পরে এখন মেট্রোর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বাইপাসের রাস্তার মাঝখানে স্তম্ভ বসিয়ে যে ভাবে চিরকালের জন্য পঙ্গু করে দেওয়া হল, সেটা দেখে মনে হচ্ছে কোনও প্রযুক্তিই নেই নির্মাণ সংস্থার হাতে।

রেল সূত্রের খবর, এই কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছে কেএমডিএ-ও। কেএমডিএ কর্তারা বেশ কয়েক বার কথা বলেছেন রেলের ওই নির্মাণ সংস্থার সঙ্গে। যদিও কাজ চালাতে গিয়ে কেন এই হাল, তার ব্যাখ্যা দিতে চাননি সেই সংস্থার কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE