‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ চালু হওয়ার পরে গত এক বছরে ১৭ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে। টোটো বন্ধ করে ই-রিকশা চালুর পরে দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও কমে যাবে বলে শুক্রবার বারাসতে মন্তব্য করলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘‘টোটো বাতিল করে আস্তে আস্তে এ বার বিধিসম্মত ই-রিকশা নিয়ে নিন সব চালক। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার এবং পরিবহণ দফতর সমস্ত রকমের সহযোগিতা করবে।’’
আদালতের নির্দেশে বাতিল হয়েছে টোটো। তার পরিবর্তে এ দিন বারাসতের কাছারি ময়দানে উত্তর ২৪ পরগনা পরিবহণ দফতরের উদ্যোগে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অটোমোটিভ টেকনোলজি (আইক্যাট) অনুমোদিত ১২০০টি ই-রিকশা তুলে দেন শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে সাড়ে ৪ হাজার ই-রিকশার রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেবলমাত্র নির্ধারিত রুটেই ই-রিকশা চলাচল করবে। কোনওমতেই জাতীয় বা রাজ্য সড়কে তা চলবে না।’’
এ রাজ্যে দু’লক্ষেরও বেশি বেকার ছেলেমেয়ে টোটো চালানোর কাজের সঙ্গে যুক্ত। সে প্রসঙ্গ তুলে এ দিন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘আদালত বাতিল করার পরেও শুধুমাত্র এই সরকার বলেই বেকার ছেলেমেয়েদের কথা ভেবে টোটোর পরিবর্তে বিকল্প ই-রিকশার পথ বার করেছে। কত কম টাকায় তা তুলে দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থাও করেছে।’’
আইক্যাট স্বীকৃত ১০টি সংস্থার পক্ষ থেকে এ দিন স্টল করে টোটোর বদলে ই-রিকশা চালু করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যই নয়, চালকদের নিজের নিরাপত্তা, বীমার কথা ভেবেও ই-রিকশা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান পরিবহণ দফতরের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, ‘‘ওজনে ভারী, ভাল ব্রেক এবং ব্যাঙ্কের সহজ কিস্তিতে এই সব ই-রিকশা মিলবে। এতে সরকারি বৈধতাও থাকবে।’’
এ দিন ই-রিকশা চালকদের হাতে নতুন চাবি তুলে দেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য, জেলা সভাধিপতি রেহেনা খাতুন, আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় এবং ওই দফতরের সদস্য গোপাল শেঠ। বারাসতের অশ্বিনীপল্লি এলাকার মহিলা চালক মনিকা পাণ্ডের মতো অনেকেই ই-রিকশার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগার করতে পারেননি। গোপালবাবু বলেন, ‘‘এদেরও আমরা টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’’
এ দিন শুভেন্দুবাবু আরও বলেন, ‘‘টোটো থেকে ই-রিকশার পরিবর্তনের মতো বেহালা, দমদমে এসি মিনিবাস, নিউ টাউনে বাইক ট্যাক্সি, বিধাননগর, রাজারহাটে ইলেকট্রিক বাস চালানোর মতো অনেক নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সে সব চালু হবে।’’