Advertisement
E-Paper

দৌড়ে নেমে এলেন সরকারি কর্তারা

উনিশ মাসে কখনও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। অন্য দিন ভিআইপি গেট দিয়ে ভিতরে পৌঁছলেই তাঁদের জন্য লিফ্‌টের দরজা খুলে যায়। শনিবার বারবেলায় সেই চেনা ছবি কোথায়! বরং পুলিশ-কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় দু’শো জোড়া চোখ দেখল, দ্রুত গতিতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসছেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব এবং শীর্ষস্তরের আরও কয়েক জন আমলা। এক বার নয়, দু’বার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৫
নীচে খোলা জায়গায় বসে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, সিএমও-র শীর্ষ অফিসার গৌতম সান্যাল, পুলিশের ডিজি জি এম পি রেড্ডি, আই জি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা প্রমুখ। শনিবার, ভূমিকম্পের পরে। ছবি: প্রদীপ আদক

নীচে খোলা জায়গায় বসে স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, সিএমও-র শীর্ষ অফিসার গৌতম সান্যাল, পুলিশের ডিজি জি এম পি রেড্ডি, আই জি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা প্রমুখ। শনিবার, ভূমিকম্পের পরে। ছবি: প্রদীপ আদক

উনিশ মাসে কখনও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। অন্য দিন ভিআইপি গেট দিয়ে ভিতরে পৌঁছলেই তাঁদের জন্য লিফ্‌টের দরজা খুলে যায়। শনিবার বারবেলায় সেই চেনা ছবি কোথায়! বরং পুলিশ-কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় দু’শো জোড়া চোখ দেখল, দ্রুত গতিতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসছেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব এবং শীর্ষস্তরের আরও কয়েক জন আমলা। এক বার নয়, দু’বার। তেরো তলা থেকে একেবারে নীচের তলায় যখন পৌঁছলেন তাঁরা, প্রত্যেকের চোখেমুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। আর ভূমিকম্পের কোনও সম্ভাবনা নেই— এমনটা নিশ্চিত হয়েই ফের নিজেদের ঘরের দিকে পা বাড়ান সরকারের মাথারা।

ঘটনাস্থল নবান্ন। শনিবার ছুটির দিন হলেও ৯১টি পুরসভায় ভোট চলায় অফিসে আসেন ওঁরা। চোদ্দো তলা বাড়িতে পুলিশ ও অন্য কর্মী মিলিয়ে আরও প্রায় দু’শো জন ছিলেন। সময় ১১টা ৪০। হঠাৎ দুলে ওঠে ঘরের চেয়ার-টেবিল। চার দিকে চিৎকার শুরু হয়ে যায়। এক রাশ অজানা বিপদের আশঙ্কা নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন সকলে। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে পা মিলিয়ে সিঁড়ির পথ ধরেন। কত দ্রুত পৌঁছনো যায় একেবারে নীচের তলায়, সেই চেষ্টায় কোনও ফাঁক ছিল না। এক তলায় নেমে কেউ কেউ নবান্নের সামনের ফুটপাথে গিয়ে দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, কেউ বা সেখানে বসে পড়েন।

ভেবেছিলেন, ওটাই শেষ। তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তাঁরা ফিরে গিয়েছিলেন নিজেদের ঘরে। কিন্তু দুপুর ১২টা ২০ নাগাদ ফের দুলে ওঠে নবান্নের দেওয়াল, আসবাব, পাখা এবং আরও অনেক কিছু। রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ায় সর্বত্র। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের সামনে কর্তব্যরত এক মহিলা পুলিশ ইন্সপেক্টর ভূকম্পনের অভিঘাতে অসুস্থ হয়ে, মাথা ঘুরে চেয়ার থেকে পড়ে যান। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে আনা হয়। আগের বারের মতো ফের সিড়ির পথ ধরে নেমে আসেন মুখ্যসচিব ও অন্যেরা। আবারও ফুটপাথে আধঘণ্টা মতো সময় কাটিয়ে তাঁরা ফিরে যান নিজের ঘরে।

নিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের এমন অবস্থার কথা বাড়িয়ে বসেই জানতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ৩টে নাগাদ তিনি নবান্নে আসেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেই সময়ে নবান্ন খুব কাঁপছিল।
মুখ্য সচিবেরা নামতেই পারছিলেন না। গুরুতর অবস্থা হয়।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর ঘরের অ্যাকোয়ারিয়ামের সব জল পড়ে গিয়ে মেঝে ভেসে গিয়েছে।

Nabanna Basudeb Banerjee earthquake Bengal government offices police Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy