Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
East-West Metro

একাই যাত্রী টেনে যাত্রা শুরু ফুলবাগানের

ফুলবাগান থেকে সল্টলেকের করুণাময়ীতে বোনের বাড়িতে প্রায়ই যেতে হয় কল্পনা নাথকে। এত দিন অটোতেই যেতেন তিনি।

সূচনা: ফুলবাগান স্টেশন থেকে মেট্রোয় উঠছেন যাত্রীরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সূচনা: ফুলবাগান স্টেশন থেকে মেট্রোয় উঠছেন যাত্রীরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০৭
Share: Save:

বরফ সাদা আলো যেন চারপাশ ধুয়ে দিচ্ছে। লিফটের দরজা, এসক্যালেটরের দেওয়াল, টিকিট কাউন্টার থেকে যাত্রী পরিষেবা কেন্দ্র― সবই স্বচ্ছ। ভিতরে এসে পড়লে মেট্রো স্টেশন না বিমানবন্দরের টার্মিনাল, ধন্দ লেগে যায়। প্ল্যাটফর্মে ঝকঝকে ট্রেন এসে থামল কাচের দেওয়ালের ওপারে। বাতানুকূল যন্ত্রের শীতল আমেজ চারপাশের বরফ স্বচ্ছতাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। কাচের দেওয়াল মোড়া ঘরে মেট্রোর কর্মী এবং আধিকারিকদের মাঝেমধ্যে কথা বলতে দেখা গেলেও শোনা যাচ্ছে না কিছুই। সে সব দেখে মনে হবে, চারপাশের জীবন্ত সব কিছুকে আঙুলের স্পর্শে ‘মিউট’ করে দিয়েছে কেউ। যাত্রীদের টুকটাক আনাগোনা চোখে পড়লেও সব শব্দ ছাপিয়ে কানে আসছে শুধুই মেট্রোসূচির বিরতিহীন যান্ত্রিক ঘোষণা।

কলকাতায় মেট্রো স্টেশনের তিন দশকের চেনা ছবির বাইরে গিয়ে ফুলবাগান থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর যাত্রী পরিষেবা শুরু হওয়ার প্রথম দিন, সোমবারের ছবিটা ছিল এ রকমই।করোনা আবহে সেক্টর ফাইভে আগের সেই কোলাহল নেই। বাইপাস সংলগ্ন মল কিংবা সল্টলেকের শপিং মলেও উপচে পড়া ভিড় নেই। ফলে ১৪ সেপ্টেম্বর ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা ফের শুরু হলেও মাত্র সাড়ে চার কিলোমিটার মেট্রো সফরে যাত্রীদের তেমন আগ্রহও চোখে পড়েনি।

এত দিন আধ ঘণ্টা অন্তর ছুটতে থাকা ৪৮টি ট্রেন গড়ে কখনও একশো বা বড়জোর দেড়শো যাত্রী পেয়েছে। সেখানে ফুলবাগান স্টেশন চালু হতেই মেট্রোর যাত্রীসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলেই আশাবাদী ছিলেন কর্তৃপক্ষ। তবে প্রথম দিনের সফরে সেই প্রত্যাশার তুলনায় ভিড় অনেকটাই কম ছিল। তবুও এ দিন যাত্রী সংখ্যায় সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ছ’টি স্টেশনের সঙ্গে একাই পাল্লা দিয়েছে ফুলবাগান স্টেশন। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এ দিন শুধু ফুলবাগান থেকেই ২৪৫ জন যাত্রী মেট্রো চড়েছেন।

ফুলবাগান থেকে সল্টলেকের করুণাময়ীতে বোনের বাড়িতে প্রায়ই যেতে হয় কল্পনা নাথকে। এত দিন অটোতেই যেতেন তিনি। মেট্রো চালু হয়েছে শুনে স্টেশনে এসে স্মার্ট কার্ড কিনে সফর করেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত ভাল ট্রেন আর স্টেশন

কলকাতায় কোনও দিন দেখব ভাবিইনি! তবে একটু বেশিই ফাঁকা বলে অস্বস্তি হচ্ছে।’’ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী, শৌভিক মুখোপাধ্যায় কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। কিছু দিন আগে কলকাতায় ফিরেছেন। মেট্রো চালু হয়েছে শুনে স্টেশনে এসেছিলেন দেখতে। স্মার্ট কার্ড ছাড়া চড়া যাবে না শুনে একটু ইতস্তত করে স্মার্ট কার্ড কিনেই ফেললেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কথা শুনেছিলাম। মনে হল চড়ে দেখে আসি। এই স্মার্ট কার্ড বাড়িতেই বাবা-মার কাছে থাকবে। যাতে ওঁরা চড়তে পারেন।’’

এ দিন সকালে ফুলবাগান থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রথম মেট্রোয় সফর করেছিলেন জনা পাঁচেক যাত্রী। অফিসের ব্যস্ত সময়ে সে ভাবে ভিড় না হলেও বেলা বাড়তে যাত্রী বেড়েছে। মেট্রো কর্তাদের আশা, পুরো পথ খুলে দিলে যাত্রীসংখ্যা বাড়বেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East-West Metro Phoolbagan Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE