(বাঁ দিকে) গ্রেফতার আনিসুর রহমান। তাঁর ভাই আলিফ নুর (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
নিজেদের ধানকলের জন্য ভুয়ো কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনেছিলেন আনিসুর রহমান এবং তাঁর ভাই আলিফ নুর ওরফে মুকুল রহমান। এমনটাই দাবি করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাদের আরও দাবি, কখনও কখনও এই দুই ভাই নিজেদেরই কৃষক হিসাবে দেখিয়েছিলেন। কখনও আবার নিজেদের কর্মচারীদেরই দেখিয়েছিলেন কৃষক হিসাবে। এ জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকাও নিয়েছিলেন বলে দাবি ইডির।
প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে দেগঙ্গার তৃণমূল নেতা আনিসুর এবং আলিফকে গ্রেফতার করেছে ইডি। শুক্রবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হয়। আনিসুরের চালকল রয়েছে। নিয়ম মেনে সেই চালকলের জন্য ধান কিনতে হয় কৃষকদের থেকে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ভুয়ো কৃষকদের থেকে চাল কিনেছিলেন আনিসুরেরা। কৃষক হিসাবে কখনও তাঁরা নিজেদের দেখিয়েছেন, কখনও নিজের চালকলের কর্মীদেরই কৃষক হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। ধানের প্রক্রিয়াকরণের জন্য টাকা দেয় সরকার। ইডির দাবি, এ জন্য ২০২২ সাল পর্যন্ত সরকারের থেকে ৪৫ কোটি টাকা নিয়েছেন আনিসুর।
রেশন দুর্নীতি মামলায় আগেই ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিক। প্রাক্তন মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। বৃহস্পতিবার রাতে আনিসুর এবং বাকিবুরের আত্মীয় আলিফকে গ্রেফতার করে ইডি। রেশন দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার ভোর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক চালকলে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তালিকায় ছিল দেগঙ্গায় আলিফের বাড়ি এবং চালকল। পাশাপাশি, বারিকের রাজারহাটের ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিল ইডি। তাঁর ফ্ল্যাটে মঙ্গলবার ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকেরা। রাতে বারিকের ফ্ল্যাট ছাড়ার সময় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে নিয়ে যান তাঁরা।
শুধু বারিকের ফ্ল্যাটে নয়, একযোগে তাঁর চালকলেও হানা দিয়েছিল ইডি। ইডির দল যখন বারিকের বাড়ি এবং চালকলে তল্লাশি চালাচ্ছিল, তখন ইডির অন্য দল পৌঁছে যায় দেগঙ্গায়। বাকিবুরের আত্মীয় আলিফের বাড়ি এবং চালকলে তল্লাশি চালায় তারা। প্রায় ২১ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান শেষে বাড়ি থেকে দু’টি মোবাইল তদন্তের কারণে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এ ছাড়া বেশ কিছু নথিপত্র এবং ১৩ লক্ষ টাকাও বাজেয়াপ্ত করে তারা। এর পরেই বারিক এবং রহমান ভাইদের সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করা হয়। আনিসুর এবং আলিফ সেই তলবেই বৃহস্পতিবার হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy