Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Gariahat

ঠাকুমার গলা কেটে খুন করছে মায়ের প্রেমিক, চোখের সামনে দেখছে নাতনি!

মায়ের কথাতেই খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছিলেন গুড়িয়া।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৩৬
Share: Save:

গরচায় গলা কাটা, পেট চেরা বৃদ্ধার মৃতদেহ দেখে শিউরে উঠেছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু ঠাকুমার ওই পরিণতি ঠায় বসে দেখেছিলেন তার বড় নাতনি গুড়িয়া। তার পর আততায়ীকে নিয়ে এলাকা ছাড়েন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, মায়ের কথাতেই খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছিলেন গুড়িয়া। ঊর্মিলা কুমারীকে খুনের ঘটনায় শুক্রবার তাঁর পুত্রবধূ ডিম্পল ঝুন্ড, নাতনি গুড়িয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় আরও এক জনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। এ দিন সন্ধ্যায় সেই সৌরভ পুরীকেও পঞ্জবের নাভা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিম্পলের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গড়িয়াহাটের গরচার ফার্স্ট লেনে বুধবার মধ্যরাতে খুন হন ঊর্মিলা কুমারী নামের ওই বৃদ্ধা। তদন্তে নামার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খুনের কিনারা হওয়ায় কথা এ দিন টুইট করে জানান কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।

পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে খুনের পরিকল্পনা করে ডিম্পল। নিজের মেয়ে ছাড়াও, এই খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল হন তাঁর এক পরিচিত ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি ডিম্পলের ‘প্রেমিক’ বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সম্পত্তির লোভেই ঊর্মিলা কুমারীকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

ডিম্পলের স্বামী মনদীপ ঝুন্ড মারা যান ২০১৪ সালে। রিচি রোডের একটি ফ্ল্যাটে দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তাঁর স্ত্রী বছর চল্লিশের ডিম্পল। স্বামী মারা যাওয়ার পর, সম্পত্তি থেকে শুরু করে ব্যবসার ভাগ নিয়ে গোলমাল লেগেই থাকত ঊর্মিলা কুমারীর সঙ্গে। তা থেকেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তবে শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভেই খুন, না কি এর নেপথ্যে আরও কিছু রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সংসারের যে কোনও সিদ্ধান্তই নিতেন ঊর্মিলা কুমারী। সেটা পছন্দ করতেন না ডিম্পল। তিনি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, মনদীপ মারা যাওয়ার পর তা ঊর্মিলার ছোট ছেলে বলরাজের নামে হয়ে যায়। ওই ফ্ল্যাটটি তাঁর নামে লিখে দেওয়ার জন্য বার বার চাপ দিলেও ঊর্মিলা কিছুতেই তা ডিম্পলের নামে লিখে দেননি। ঊর্মিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর বড় ছেলে মনদীপ এবং ছোট ছেলে বলরাজ ব্যবসা দেখতেন। ২০১৪ সালে মনদীপ মারা যাওয়ার পর ওই ব্যবসা দেখাশোনা করতেন বলরাজ একাই। ব্যবসার লভ্যাংশ ডিম্পলকে না দিয়ে মাসোহারা দিতেন বলরাজ। তা নিয়েও ক্ষোভ ছিল। এ ছাড়াও একটি ব্যাঙ্কের লকার নিয়েও শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে ঝামেলা ছিল।

তদন্তকারীদের একটা অংশ জানাচ্ছেন, খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে প্রথমে ঊর্মিলাকে অচৈতন্য করে ফেলা হয়। তার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গভীর ক্ষত করা হয়। ‘পেরিমর্টাম’ অবস্থায় তাঁর পেট চেরা হয় বলেও জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। এর পর ধড় থেকে মুন্ডু কাটা হয় বৃদ্ধার। গোটা কাজটাই করেছেন ডিম্পলের প্রেমিক সৌরভ। আর পুরো ঘটনা সামনে থেকে দেখেছেন নাতনি গুড়িয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Elderly Woman Gariahat Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE