Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Anirban Bhattacharya

Bachhorer Best 2021: বেড়া ভাঙার অনুষ্ঠান! শ্রেষ্ঠত্বের অন্বেষণেও নতুন যৌবনের দূত আনন্দবাজার অনলাইন

বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে, ভৌগোলিক থেকে সামাজিক বেড়া ভাঙার সাহসে আলোকিত হয়ে রইল আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট সন্ধ্যা’। এ বছর যার দুইয়ে পা।

বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার-সহ অন্যেরা।

বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রধান সম্পাদক অভীক সরকার-সহ অন্যেরা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ২১:৫১
Share: Save:

পুরনোকে বয়ে নিয়ে চলা নয়। বেড়া ভেঙে স্থাপন করা নতুন ঐতিহ্য। বরাবর সে পথেই হাঁটে আনন্দবাজার অনলাইন। সেই পথচলার দৃপ্ত ভঙ্গিতেই যেন গাঁথা রইল তার শ্রেষ্ঠত্বের অন্বেষণও। বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে, ভৌগোলিক থেকে সামাজিক বেড়া ভাঙার সাহসে আলোকিত হয়ে রইল আনন্দবাজার অনলাইনের ‘বছরের বেস্ট সন্ধ্যা’। এ বার যার দুইয়ে পা।

অতিমারি আবহে প্রথম বছর সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানই ছিল ভরসা। এ বছর আড়ে-বহরে চোখ টেনে সপ্তাহশেষের ঝলমলে সন্ধ্যায় আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে শিরোপা পেলেন ‘বছরের বেস্ট একাদশ’। গত ১২ মাসে এই ১১ জন কৃতী বাঙালিকে জহুরির চোখ দিয়ে খুঁজে নিয়েছে আনন্দবাজার অনলাইন।

আবহে কৌশিক দাসের পিয়ানো বাদন। তা পেরিয়ে অভিনেতা-পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্যের উদাত্ত কণ্ঠে ‘বাঁধ ভেঙে দাও’-এ বুঝি বাঁধা হয়ে গিয়েছিল অনুষ্ঠানের মূল সুর। ‘তাসের দেশ’-এর গানের সেই অমোঘ বার্তার ধরতাই এর পরে আনন্দবাজার ডিজিটালের প্রধান সম্পাদক স্বয়ং অভীক সরকারের কণ্ঠে— ‘‘আমার সাদা চুল আর দাড়ি দেখে ভুল বুঝবেন না। আমিও কিন্তু বাঁধ ভাঙি!’’ কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে দুই বাংলার মানুষদের মধ্যে থেকে এর পর খুঁজে নেওয়ার পালা ‘বছরের বেস্ট একাদশ’কে। যার সঞ্চালনায় আনন্দবাজার অনলাইনের সম্পাদক অনিন্দ্য জানা এবং বিনোদন বিভাগের সম্পাদক স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। অনির্বাণের প্রথা ভাঙা নান্দীমুখকে এগিয়ে নিয়ে যায় বিরতিতে স্রবন্তীর অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের সুরে সুর মিলিয়েই তিনি গেয়ে ওঠেন ‘আমরা নূতন যৌবনেরই দূত’।

অনির্বাণ ভট্টাচার্যের উদাত্ত কণ্ঠে ‘বাঁধ ভেঙে দাও’-এ বুঝি বাঁধা হয়ে গিয়েছিল অনুষ্ঠানের মূল সুর।

অনির্বাণ ভট্টাচার্যের উদাত্ত কণ্ঠে ‘বাঁধ ভেঙে দাও’-এ বুঝি বাঁধা হয়ে গিয়েছিল অনুষ্ঠানের মূল সুর। —নিজস্ব চিত্র

বছরের বেস্ট সুকুমার উপাধ্যায়
কেউ তারকা। কেউ খ্যাতনামী। কেউ শিক্ষা, কেউ প্রযুক্তিতে, কেউ বিজ্ঞান, কেউ বিনোদনে বছরভরের সাফল্যে নজরকাড়া। সমাজ ও জীবনের এক-একটি ক্ষেত্র থেকে খুঁজে নেওয়া সেই ‘বেস্ট’দের ভিড়ে জায়গা করে নিয়েছেন সাধারণ হয়েও ‘অ-সাধারণ’ এক মানুষ। গ্ল্যামারের দ্যুতি থেকে ঢের দূরে থেকেও তিনিই প্রথম বছরের বেস্ট। পেশায় পুলিশ, নেশায় সমাজকর্মী সুকুমার উপাধ্যায় গত বছরে আনন্দবাজার অনলাইনের খুঁজে নেওয়া ১২ জন ‘অ-সাধারণ’ এক জন। গত ৩০ বছরে পেশার ফাঁকে যখন যেমন সময় পাওয়া, তিনি ছিলেন মানুষের পাশেই। তাঁর হাতে সম্মান তুলে দেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী।

বছরের বেস্ট পার্থ মজুমদার
করোনা তাঁকে কাবু করেছিল সপরিবার। তবু থমকে দিতে পারেনি তাঁর গবেষণার গতি। করোনা নিয়েই নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন পার্থ মজুমদার। যাঁর দাড়ির দৈর্ঘ্য খানিক লম্বা হলেই অবিকল প্রোফেসর শঙ্কু হয়ে উঠতেন! অতিমারি-জর্জরিত সময়ে করোনার কোন রূপ সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে, তার হদিশ প্রথম মিলেছিল এই বিজ্ঞানীর হাত ধরেই। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া এবং হরিয়ানার অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়।

বছরের বেস্ট প্রিয়ঙ্কা বসু
বাংলা থেকে ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাপটে অভিনয় করে চলেছেন প্রিয়ঙ্কা বসু। হলিউড সিরিজ ‘দ্য হুইল অব টাইম’-এর অভিনেত্রী অবশ্য ওয়েব সিরিজের ব্যস্ততার কারণে অনুপস্থিত। সকাল সাড়ে ৮টায় ভিনরাজ্যে তাঁর শ্যুটিং কলটাইম। অগত্যা ভিডিয়ো বার্তায় জানিয়েছেন তাঁর কৃতজ্ঞতা।

বছরের বেস্ট অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
খাবারদাবারের দুনিয়ায় তাঁর নাম জানে না, এমন লোক মেলা ভার। এসআরপিএম গোষ্ঠীর অধিকর্তা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় রেস্তরাঁ ব্যবসায় কলকাতাকে পৌঁছে দিয়েছেন দেশ তথা বিশ্বের মানচিত্রে। লন্ডনে তাঁর বাঙালি রেস্তরাঁ ‘চৌরঙ্গী’তে সাহেবদের পাত পেড়ে খাওয়াচ্ছেন মাছ-ভাত! এ দিনের অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে সম্মান তুলে দেওয়ার ভার ছিল অভিনেত্রী পাওলি দাম ও নৃত্যশিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরে।

বছরের বেস্ট মধুমিতা সরকার
ছোটপর্দা থেকে বড় পর্দা হয়ে মোবাইল স্ক্রিনে ওটিটি ছবি— সবেতেই ইদানীং তাঁর অবাধ যাতায়াত। একের পর এক ধারাবাহিক থেকে সদ্য ওয়েব সিরিজ ‘উত্তরণ’-এ তাক লাগিয়ে দিয়েছে তাঁর অভিনয়। দশ বছরেই খুলেছেন নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা। মিমি নাকি নুসরত, কার সঙ্গে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা? মধুমিতার খোলাখুলি জবাব, অভিনয় ভালবেসেই তিনি এই জগতে। কারও সঙ্গে টক্করের প্রশ্নই নেই।

বছরের বেস্ট অমিতাভ রায়
এক কালের মেধাবী ছাত্র এখন প্রযুক্তি কর্তা হয়ে একের পর এক সংস্থায় সামলাচ্ছেন গুরুদায়িত্ব। এরিকসন গ্লোবাল সার্ভিসেস-এর এম ডি অমিতাভ রায়। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও অভিনেত্রী রাইমা সেনের হাত থেকে নিলেন পুরস্কার। সঞ্চালকের প্রশ্নে সোজাসাপ্টাই জানিয়ে দিলেন, এ বাংলায় প্রতিভার অভাব নেই। প্রযুক্তির জয়যাত্রা তাই মোটেই অধরা স্বপ্ন নয়।

বছরের বেস্ট ঝুলন গোস্বামী
বল গার্ল হয়ে দৌড় শুরু করে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়কের ছুট এখনও থামেনি। তিনি ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’ ঝুলন গোস্বামী। ঝুলিতে একের পর এক বিশ্বরেকর্ড। বন্ধন ব্যাঙ্কের মহাকর্তা চন্দ্রশেখর ঘোষ তাঁর হাতে তুলে দিলেন সম্মান। গোস্বামী, গঙ্গোপাধ্যায়— ব্রাহ্মণ ছাড়া বাঙালি কি ভারত অধিনায়ক হন না? সঞ্চালকের এমন বাউন্সারও কিন্তু দিব্যি সামলে নিলেন জোরে বোলার ঝুলন!

বছরের বেস্ট মেরিনা তবসসুম
পেশায় স্থপতি ওপার বাংলার ঢাকা শহরের মেরিনা তবসসুম। এই মুহূর্তে হার্ভার্ডে, স্থাপত্যবিদ্যার প্রশিক্ষণে। প্রার্থনা গৃহ থেকে বসতবাড়ি, ঘরছাড়াদের ঘর— সবই তিনি গড়েন পরম যত্নে। ধ্যান, জ্ঞান সবটা জুড়েই তাঁর স্থাপত্য। মায়ের প্রিয় শহর কলকাতায় আসতে না পেরে মনমরা মেরিনা ভিডিয়ো বার্তায় পুরস্কারের কৃতিত্ব অনায়াসে ভাগ করে নিয়েছেন তাঁর সঙ্গে কাজ করা গোটা দলের সঙ্গেই।

বছরের বেস্ট অনির্বাণ ভট্টাচার্য
নাটকের মঞ্চশিল্পী থেকে ছবি-সিরিজের ব্যস্ত নায়ক। অনির্বাণ ভট্টাচার্য একাধারে এবং সমানতালে। ‘মন্দার’-এর পরিচালক হয়ে তাঁর নতুন যাত্রা শুরু। অভিনেতারা এখন আর তারকা নন, চরিত্র। পর্দার ব্যোমকেশ তাঁদেরই দলে, তাঁদেরই উজ্জ্বলতম মুখ। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং গায়ক-অভিনেতা রূপঙ্কর বাগচীর হাত থেকে পুরস্কার নেন। শাশ্বত না ঋত্বিক, কে বড় অভিনেতার কঠিন প্রশ্নে সপাটে জবাব আসে— ঋত্বিক।

আগামীর বেস্ট সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়
মডেলিং থেকে সিনেমায়। ঝলমলে কন্যে এখন টলিউডে নুসরতের ‘বোন’। পর্দায় ‘প্রেমটেম’ করে আসানসোলের কুলটির মেয়ে সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় ইদানীং অভিনয় দুনিয়ার চেনা মুখ। তিনিই আগামীর বেস্ট। শালিমারের দুই কর্তা, হীরক ভট্টাচার্য এবং তিলক ভট্টাচার্য তাঁর হাতে তুলে দেন সম্মান।

সবচেয়ে বেস্ট সোহম গুপ্ত
তিনি ছবি তোলেন। ক্যামেরা হয়ে ওঠে ক্যানভাস। আলোকচিত্রকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে স্বীকৃতি পাওয়া বাঙালিদের এক জন, ফোটোশিল্পী সোহম গুপ্ত। পুরস্কার নিলেন টলিউডের ‘ইন্ডাস্ট্রি’ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া রায়ের হাত থেকে। দিতিপ্রিয়া নিজেও ছিলেন গত বছরের পুরস্কার জয়ী।
শেষ পাতে বাবা-মেয়ের ছবি ‘আয় খুকু আয়’ নিয়ে দু’চারকথায় প্রসেনজিৎ। মন খুলে প্রশংসা করলেন পর্দায় তাঁর মেয়ে ‘গুড়িয়া’ দিতিপ্রিয়ারও। আর দিতিপ্রিয়া নিজে? এক বছর আগের মঞ্চে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল প্রসেনজিতের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পেলে কী করবেন। এক বছর পরে সেটাই বাস্তব। তাতেই আপ্লুত ছোট পর্দার ‘রাণী রাসমণি’।

অনুষ্ঠানের আয়োজনে ছিল শালিমার এনরিচড কোকোনাট হেয়ারঅয়েল। পাওয়ার্ড বাই সিইএসসি। সহযোগী সংস্থার দলে ছিল এবিপি ওয়েডিং, এএমআরআই হসপিটালস, ডলার, আনন্দ পাবলিশার্স, গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল এবং বি সি সেন জুয়েলার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anirban Bhattacharya
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE