Advertisement
E-Paper

ডাম্পির বিরুদ্ধে মামলা, জল্পনায় গ্রেফতারি

তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডাম্পির বিরুদ্ধে মামলা চালু করল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। শুক্রবার রাতেই ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৬ ০১:০৩

তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ডাম্পির বিরুদ্ধে মামলা চালু করল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। শুক্রবার রাতেই ওই এলাকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, ডাম্পি-সহ সব অভিযু্ক্ত এলাকা ছাড়া। তাঁদের বাড়িও তালাবন্ধ।

বিধাননগর পুর নিগমের ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহনওয়াজ আলি মণ্ডল ওরফে ডাম্পির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন এক নির্মাণ ব্যবসায়ী। শুক্রবার বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দাপ্রধান সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘ডাম্পির বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।’’ তবে পুলিশই নয়, তৃণমূলের অভ্যন্তরেও ডাম্পিকে নিয়ে আলোচনা চলছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ডাম্পির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পুলিশকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হতে পারে।

বিধাননগর পুর নিগমের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের করে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে তোলাবাজির মামলা রুজু করে অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, অনিন্দ্যের ক্ষেত্রেও তাঁকে গ্রেফতারের আগে তৃণমূলের উপরমহলের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করা হয়েছিল। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত আসতেই অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটছে।

বৃহস্পতিবার ডাম্পির বিরুদ্ধে কমিশনারেটে তোলা একটি পুরনো ঘটনার ভিত্তিতে হুমকির অভিযোগ দায়ের করেন অনুপপ্রসাদ শর্মা নামে এক নির্মাণ ব্যবসায়ী। তাঁর অভিযোগ অনুসারে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাবলাতলায় অনুপবাবুর কেনা একটি বাড়ি রয়েছে। কিন্তু তোলার জন্য ডাম্পি ও তাঁর লোকজন সেই বাড়ির চাবি অনুপবাবুর কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

শুক্রবার প্রতিক্রিয়া নিতে ফোন করা হলে ডাম্পি ফোন ধরেননি। মন্তব্য করতে রাজি হননি বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তও। ডাম্পি সব্যসাচীবাবুর ঘনিষ্ঠ লোক বলেই পরিচিত।

পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এক সময়ে অনুপবাবুর বিরুদ্ধে ওই বাড়িটিকে ঘিরে একটি প্রতারণার অভিযোগও দায়ের হয়েছিল। ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। অভিযোগ ছিল, কেনার আগে বাড়িটির পুরনো মালিক ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে গোলমাল চলাকালীনই মালিক তাঁর স্ত্রীকে না জানিয়ে বাড়িটি অনুপবাবুকে বিক্রি করে দেন। পরে ওই বাড়ির পুরনো মালিকের স্ত্রী অনুপবাবুর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন।

শুক্রবার অনুপবাবু বলেন, ‘‘সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। ডাম্পিরাই ওই মহিলাকে দিয়ে মামলা করান।’’

দলের একটি অংশের মতে, তোলাবাজি, সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য বন্ধে রাশ টানতে চাইছে শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই রং না দেখে কড়া পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে পুলিশকে। অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে দিয়ে যা শুরু হয়েছে। অনিন্দ্য গ্রেফতারের পরেও একই ধরনের অভিযোগ উঠছে অনেকের বিরুদ্ধে। এমনকী, তার গ্রেফতারির দু’দিন পরে পাঁচ নম্বর সেক্টরে নাবার্ডের অফিস তৈরির সময়েও নির্মাণকারী সংস্থাকে তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাতেও পরোক্ষ ভাবে বিধাননগরের এক কাউন্সিলরের নাম জড়িয়ে গিয়েছিল। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সারবত্তা থাকলে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই। সেই সূত্র ধরেই তৃণমূলের একটি অংশের মতে, ডাম্পি নিরাপদ নন। তবে এই সব অভিযোগ কেন ও কী ভাবে হচ্ছে, এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে শাসক দল সূত্রের দাবি।

ফের জড়াল কাউন্সিলরের নাম। ডাম্পির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাশাপাশি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কৈখালির সর্দারপাড়া থেকেও চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে পুর নিগমে তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন অমল সেন নামে এক বৃদ্ধ। অমলবাবুর অভিযোগ, স্থানীয় কাউন্সিলর সুভাষ বসুর নাম করে কিছু যুবক তোলা চাওয়ায় তিনি তাঁর বাড়ির সংস্কারের কাজ করতে পারছেন না। বিষয়টি তিনি পুর নিগমকে জানিয়েছেন। সুভাষবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘পাড়ার লোকজন ওই সংস্কারের কাজ নিয়মমাফিক হচ্ছে না বলে আমার কাছে অভিযোগ করেছিল। বিষয়টি পুর নিগমকে খতিয়ে দেখতে বলেছি।’’

Dumpy Mondal extortion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy