Advertisement
E-Paper

উচ্চশিক্ষায় ‘বাধা’, দগ্ধ হয়ে মৃত্যু রাজারহাটে

শনিবার অনেক রাতে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তানিয়া অগ্নি আলি (২৮) নামে রাজারহাটের বাসিন্দা ওই বধূর। রবিবার রাজারহাট থানায় তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁর পরিজনেরা। এ দিনই তানিয়ার স্বামী ইকবাল আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২২
তানিয়া অগ্নি আলি

তানিয়া অগ্নি আলি

অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক বধূর মৃত্যুতে ফের উঠে এল উচ্চশিক্ষায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত, মৃতার স্বামী শহরেরই এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এমন এক জনের বিরুদ্ধে শিক্ষায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় স্বভাবতই বিস্মিত তাঁর সহকর্মী থেকে প্রতিবেশীরা।

পুলিশ জানায়, শনিবার অনেক রাতে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তানিয়া অগ্নি আলি (২৮) নামে রাজারহাটের বাসিন্দা ওই বধূর। রবিবার রাজারহাট থানায় তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তাঁর পরিজনেরা। এ দিনই তানিয়ার স্বামী ইকবাল আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে বধূ হত্যা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, পণের অভিযোগ রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা ওই বধূর পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের আগে বলা হয়েছিল তানিয়া উচ্চশিক্ষা করতে পারবে, চাকরিও করতে পারবে। কিন্তু বিয়ের পরে সে বিষয়ে উল্টো অবস্থান নেয় তানিয়ার শ্বশুরবাড়ি। চাকরি করতে দেওয়া তো দূর অস্ত্‌, উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা প্রকাশ করায় শুরু হয় অশান্তি। সঙ্গে ফ্ল্যাট, গাড়ি ও টাকা সংক্রান্ত দাবিও করেন তাঁরা। তা নিয়ে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনও চালানো হতো তানিয়ার উপরে।

শুক্রবার রাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তানিয়াকে। পরে বাইপাসের ধারেই দক্ষিণ শহরতলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ভর্তির সময়ে তানিয়ার শরীরের অধিকাংশই পুড়ে গিয়েছিল। শনিবারই তানিয়ার বাবা গোলাম সাত্তার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। মেয়ের সঙ্গে একই বাড়িতে ছিলেন তাঁর জামাই ও নাতি-নাতনি। তবে কী ভাবে একা তানিয়াই পুড়ে গেলেন, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, তানিয়ার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ এই ঘটনায় যুক্ত।

পুলিশ জেনেছে, বছর পাঁচেক আগে তানিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় ইকবালের। তাঁদের তিন বছরের ছেলে এবং এক বছরের মেয়ে রয়েছে। রাজারহাট বিষ্ণুপুরের দাসপাড়ায় এক বহুতলের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তাঁরা। তানিয়ার বাবার দাবি, ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া ও গন্ধ বেরোতে দেখে প্রতিবেশীরা তানিয়াকে উদ্ধার করেন। তিনি পুলিশকে জানান, এ দিন সকালে তানিয়ার পরিজনেরা সেই ফ্ল্যাটে যান। তানিয়ার বাবার অভিযোগ, ওই ফ্ল্যাটের একটি শৌচাগারের ভিতরে কল ও পাইপ সব পুড়ে গিয়েছিল। তার দাবি, ওই শৌচাগারেই তাঁর মেয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে তানিয়ার শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের দাবি, তানিয়া নিজেই গায়ে আগুন দেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তানিয়া অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা জানতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে আরও কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত হবে পুলিশ। সব দিক খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করা হবে।

এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ পেয়ে রীতিমতো অবাক ইকবালের সহকর্মীরা। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, ইকবালের বাড়িতে যে এমন ঘটতে পারে, তা ভাবতে পারেননি তাঁরা। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবু তালেব খান বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ওঁদের তো দুই সন্তানও রয়েছে।’’

Rajarhat Burnt To Death higher education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy