আইআইএম জোকায় ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় এ বার ধৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলতে চায় পুলিশ। অভিযুক্তের পরিবারকে হরিদেবপুর থানায় ডাকা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ছাত্রের পোশাকও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই ঘটনার তদন্তে ন’জন সদস্যের সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করেছেন কলকাতা পুলিশের সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশনের ডিসি (ডেপুটি কমিশনার)। সিটের নেতৃত্বে রয়েছেন অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার (এসি) পদাধিকারী।
আইআইএম জোকার বয়েজ় হস্টেলে নিয়ে গিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ‘নির্যাতিতা’র লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবারই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে আগামী শনিবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এর মধ্যে তরুণীর বাবা দাবি করেন, মেয়ের উপর কোনও অত্যাচার হয়নি। কেউ খারাপ ব্যবহারও করেননি। সংবাদমাধ্যমের সামনে ‘নির্যাতিতা’র বাবা যা জানিয়েছেন, আদালতে এসেও তিনি সেই কথাগুলি বলেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়। তবে তিনি বা তাঁর তরফে কেউ শনিবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
পুলিশের কাছে জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছিলেন, শুক্রবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি অভিযুক্তের কাউন্সেলিং করাতে আইআইএম জোকায় গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত তাঁকে বয়েজ় হস্টেলের ভিতর নিয়ে যান। বয়ান অনুসারে, সেখানে ওই তরুণীকে পিৎজ়া এবং জল খেতে দেওয়া হয়। খাবারে কিছু মেশানো ছিল বলে অভিযোগ। ‘নির্যাতিতা’ জানান, ওই খাবার খাওয়ার পরেই তাঁর মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে। এই সময় তাঁর বমি পেলে তাঁকে শৌচাগারেও যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এ ক্ষেত্রে নাকি অভিযুক্তের ব্যাখ্যা ছিল, বয়েজ় হস্টেলে এক জন মেয়ে এসেছে, এটা তাঁর বন্ধুরা জেনে যেতে পারেন। ‘নির্যাতিতা’র লিখিত বয়ান অনুযায়ী, দু’জনের কথাবার্তা চলার সময়ে হঠাৎই অভিযুক্ত তাঁর চুল টেনে ধরেন। আত্মরক্ষায় চড় মারেন তরুণী। তার পরেই অভিযুক্ত তাঁর মাথা ঠুকে দেন। সংজ্ঞা হারান ‘নির্যাতিতা’। লিখিত বয়ানে ‘নির্যাতিতা’ জানিয়েছেন, অর্ধচেতন অবস্থায় তিনি বুঝতে পারেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। অনেক পরে জ্ঞান ফিরলে তরুণী দেখেন যে, তিনি বয়েজ় হস্টেলে রয়েছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তরুণীর অভিযোগ, ম্যানেজমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই অভিযুক্ত হস্টেলে ঢোকার আগে রেজিস্টার খাতায় তাঁকে নাম নথিভুক্ত করতে দেননি।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম আরজি কর এবং কসবার ঘটনার মতোই আইআইএম জোকার ক্ষেত্রেও ধর্ষণে অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)