Advertisement
২৭ মার্চ ২০২৩

প্রতিবাদীকে খুনের ‘ইনসাফ’ চেয়ে পথে নামলেন মহিলারা

খুনের দু’দিন পরেই তাঁরা ভিড় করে বাড়িতে এসেছিলেন। বলেছিলেন, কী ভাবে ইভটিজিংয়ের হাত থেকে তাঁদের সম্মান রক্ষা করেছেন নজরুল ইসলাম। আর সেই প্রতিবাদীকে খুনের পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের অধিকাংশ ধরা না পড়ায় বুধবার প্রতিবাদ মিছিলে গর্জে উঠলেন মেটিয়াবুরুজের লিচুবাগান বস্তির মহিলারা। তাঁরা ‘ইনসাফ’ চাইলেন সরবে।

নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সালমা বিবি এবং মেয়ে। বুধবার,  মেটিয়াবুরুজের সেই মিছিলে। — নিজস্ব চিত্র

নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সালমা বিবি এবং মেয়ে। বুধবার, মেটিয়াবুরুজের সেই মিছিলে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০০:৫১
Share: Save:

খুনের দু’দিন পরেই তাঁরা ভিড় করে বাড়িতে এসেছিলেন। বলেছিলেন, কী ভাবে ইভটিজিংয়ের হাত থেকে তাঁদের সম্মান রক্ষা করেছেন নজরুল ইসলাম। আর সেই প্রতিবাদীকে খুনের পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের অধিকাংশ ধরা না পড়ায় বুধবার প্রতিবাদ মিছিলে গর্জে উঠলেন মেটিয়াবুরুজের লিচুবাগান বস্তির মহিলারা। তাঁরা ‘ইনসাফ’ চাইলেন সরবে।

Advertisement

এ দিন বিকেলে নজরুলের খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে হওয়া মিছিলে হেঁটেছেন পাঁচশোরও বেশি মানুষ। আর তাঁদের মধ্যে চারশোই মহিলা। প্রায় সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। শুধু খুনিদের গ্রেফতার করার দাবি নয়, ওই মহিলাদের জন্যই মিছিল থেকে আওয়াজ উঠল: এলাকায় মদ-জুয়া-সাট্টার ঠেক অবিলম্বে বন্ধ করতে পুলিশ-প্রশাসনকে উদ্যোগী হতে হবে। ওই মদ-জুয়ার ঠেকের বিরুদ্ধে বহু বার সরব হয়ে দুষ্কৃতীদের রোষে আগে থেকেই পড়েছিলেন নজরুল। আর শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ চুরির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে, হুকিংয়ের খবর সিইএসসি-কে দেওয়ায় সেই ‘অপরাধে’ ওই রাতে দুষ্কৃতীরা তাঁকে থেঁতলে-পিটিয়ে খুন করে।

নজরুলের বাড়ির লোকজন পাঁচ জনের নাম দিয়ে, নির্দিষ্ট ভাবে তাদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেও শনিবারের পর এক জন দুষ্কৃতীও ধরা পড়েনি।

দোষীদের সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন মিছিলের ডাক দিয়েছিল গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বা এপিডিআর। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ মিছিল শুরু হয় মেটিয়াবুরুজ কলেজের সামনে থেকে। কটন মিল, পানিকল, আক্রা রোড হয়ে মোট পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে মিছিল পৌঁছয় মেটিয়াবুরুজ থানায়। আগাগোড়া মিছিলে হাঁটেল নজরুলের স্ত্রী সালমা বিবি এবং তাঁর দশ ও পাঁচ বছরের দুই মেয়ে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিও। থানার সামনে মিনিট পনেরো একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সালমা বলেন, ‘‘আমি শুধু ইনসাফ চাইছি। আমার স্বামীর খুনিদের এখনও কেন গ্রেফতার করা হল না? ওরা তো এলাকার ছেলে।’’

Advertisement

এর পর থানায় ঢুকে খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

মিছিলে মহিলারা বলছিলেন, ‘‘নজরুলের খুন হওয়া আমাদের এলাকার তো বটেই, সমাজেরও বড় ক্ষতি।’’ এক মহিলার কথায়, ‘‘নজরুল এক দিকে যেমন প্রতিবাদী চরিত্র ছিলেন, তেমন নিজে সেবামূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এমন মানুষের অভাব পূরণ হবে না।’’

মিছিল যত এগিয়েছে, তত বহু মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে তাতে যোগ দিয়েছেন, স্লোগান দিয়েছেন।

সানি পার্কে রহস্যজনক ভাবে মৃত, স্কুলছাত্র আবেশ দাশগুপ্তর জন্য মিছিল বলে প্রতিবাদী নজরুলের জন্য সুবিচার চেয়ে মিছিল হবে না কেন, এই প্রশ্ন উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ডিসি (বন্দর) সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের হদিস পেতে আমরা খুব চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.