প্রেমের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন মেয়ে। পাড়ায় মেয়ের প্রাক্তন প্রেমিকের কথা অনেকেই জানেন। তাই পরিচিতদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছিল তাঁকে। মেয়েও জেদ ধরেছেন, ভাঙা সম্পর্ক আর জুড়বেন না। এ নিয়ে মেয়ের সঙ্গে বাবার বচসা বাধে। রাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বাবা। অভিযোগ, এর পরে মত্ত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হন মেয়ের সেই প্রাক্তন প্রেমিকের বাড়িতে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ট্যাংরার শীল লেনে। ঘটনাচক্রে, টহল দেওয়ার সময়ে সেখানে এসে পড়ে ট্যাংরা থানার একটি গাড়ি। হাতেনাতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃতের নাম ভোলানাথ কর। এক সময়ে স্থানীয় ট্যাংরা-হাওড়া রুটে মিনিবাস চালাতেন তিনি। বাস শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পুলিশ জেনেছে, সমাজমাধ্যমের সূত্রে ভোলানাথের মেয়ের সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সম্পর্ক সম্প্রতি ভেঙে যাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছিল ভোলানাথকে। তাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় পেলেন, জানার চেষ্টা চলছে।
এ দিন শীল লেনে গিয়ে জানা গেল, অপর্ণা দে নামে এক মহিলার বাড়িতে চড়াও হন ওই ব্যক্তি। অপর্ণার ছেলের সঙ্গেই ভোলানাথের মেয়ের সম্পর্ক ছিল। রাত ১২টার কিছু পরে ওই ঘটনা ঘটে বলে জানান প্রতিবেশীরা। অপর্ণার অভিযোগ, ‘‘ছেলে তখন ঘুমোচ্ছিল। ওই ব্যক্তি দরজায় ধাক্কা দেন। আমি দরজা খুলতেই তিনি ঘরে ঢুকে আমার কপালে পিস্তল ঠেকান। আমি কোনও মতে ওঁকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে লোকজনকে ডাকি।’’ অপর্ণার সঙ্গেই ছিলেন তাঁর ছেলে। তিনি বলেন, ‘‘ভোলানাথবাবুর মেয়েই সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। কয়েক মাস হল, আমাদের যোগাযোগ নেই। আমি ছোটখাটো কাজ করি। অল্পবিস্তর ধার-দেনাও রয়েছে। সেই কারণেই ও সম্পর্ক ভেঙে দেয়। কিন্তু তার ফলে যে ওর বাবা মত্ত অবস্থায় এসে এমন ঘটনা ঘটাবেন, তা বুঝতে পারিনি।’’
শীল লেনের খুব কাছেই পটারি রোড। সেখানকার মালিপাড়ায় একটি বহুতলের একতলার ফ্ল্যাটে ভোলানাথ থাকেন ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে। তাঁর মেয়ে জানান, মঙ্গলবার রাতে ভোলানাথ ঝগড়া করে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমি সম্পর্ক ভেঙেছি, কারণ ছেলেটির স্বভাব ভাল নয়। অনেকের কাছে ধার-দেনা করেছে। এমনকি, সে জন্য পাড়ায় মারধরও খেয়েছে। এমন ছেলের সঙ্গে আমি সম্পর্ক রাখব না, সেটা বাবাকে স্পষ্ট করে বলেছিলাম। তা নিয়েই বাবার সঙ্গে অশান্তি হয়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)