ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র-সহ শ্রীলঙ্কার পাঁচ তামিল টাইগার ধরা পড়ল মধ্য কলকাতার এক হোটেল থেকে। শনিবার, স্বাধীনতা দিবসে চাঁদনি চক এলাকার একটি হোটেল থেকে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এলটিটিই-র ওই সদস্যদের গ্রেফতার করলে পুলিশ মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
তবে এ দিন দফায় দফায় ওই পাঁচ জনকে জেরা করে এসটিএফ জেনেছে, এক সময়ে সন্ত্রাসবাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকলেও বছর চারেক আগে তারা সবাই এলটিটিই-র সংস্রব ত্যাগ করেছে। ভুয়ো পরিচয়পত্র-সহ কলকাতায় আসার সঙ্গেও সন্ত্রাস সংক্রান্ত বিষয়ের যোগাযোগ খুঁজে পায়নি এসটিএফ। ধৃতদের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক আইনে মামলা রুজু হয়েছে। তামিলনাড়ুর বাসিন্দা হিসেবে নিজেদের সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্রও বার করে নিয়েছিল ধৃতেরা। আজ, রবিবার তাদের কলকাতায় আদালতে হাজির করানোর কথা।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের তিন জন জাফনা জেলার বাসিন্দা। বাকি দু’জনের বাড়ি কিলিনোচ্ছি জেলায়। জাফনায় ছিল এলটিটিই-র সদর দফতর। জাফনাকে এক সময় ‘স্বাধীন’ বলেও ঘোষণা করেছিল টাইগাররা। ধৃত পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের বাড়ি জাফনায় বলে জানার পরে গোয়েন্দারা আরও উদ্বিগ্ন হন। এমনিতেই স্বাধীনতা দিবসে ভারতে বড়সড় জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে একাধিক সতর্কবার্তা এসেছে। তার উপরে এলটিটিই-র সঙ্গে এ দেশের মাওবাদীদের যোগাযোগ নিয়ে বহু গোয়েন্দা-রিপোর্টও রয়েছে।
এসটিএফ সূত্রের খবর, আদতে শ্রীলঙ্কার নাগরিক ওই পাঁচ জন দু’দিন আগে তামিলনাড়ু থেকে কলকাতায় পৌঁছয়। চাঁদনি চকের হোটেলটিতে তারা দু’টি ঘর ভাড়া নেয়।
কী ভাবে তাদের খোঁজ পাওয়া গেল? গোয়েন্দারা জানান, শুক্রবার শিলিগুড়ির কাছে নকশালবাড়ির পানিট্যাঙ্কিতে ভারত-নেপাল সীমান্তে তামিলনাড়ুর এক বাসিন্দাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করেই চাঁদনি চকের হোটেলে ওঠা শ্রীলঙ্কার পাঁচ নাগরিকের কথা জানা যায়।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, এক জালিয়াত-চক্র ওই পাঁচ জনকে জানিয়েছিল, কলকাতায় এলে তাদের সকলের জাল পাসপোর্ট করানো হবে। ওই পাসপোর্ট নিয়ে পাঁচ প্রাক্তন টাইগার ইউরোপে জীবিকার খোঁজে পাড়ি দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা।