যাত্রীরা বিরক্ত, পাইলটেরা বিরক্ত, মুখ ভার বিমান সংস্থারও।
বিকেলের পরে কলকাতায় আসা বেশির ভাগ বিমানই দেরিতে নামছে। ছাড়ছে দেরিতে। নির্ধারিত সময়ে বিমান ছাড়তে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছে সংস্থা। জ্বালানি পুড়ছে বেশি, বাড়ছে খরচও।
অভিযোগ, এখন রোজ বিকেল-সন্ধ্যায় শহরের আকাশে গড়ে ১২ থেকে ১৪টি বিমানের লাইন পড়ছে। এক-একটিকে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চক্কর কাটতে হচ্ছে। এক বিমান সংস্থার কর্তার কথায়, ‘‘এত দিন এই সমস্যা মূলত মুম্বই-দিল্লিতে হতো। সেখানে উড়ান বেশি বলে নামার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। তাই অতিরিক্ত জ্বালানি নিতে হতো। এ বার কলকাতায় আসতেও একই জিনিস করতে হচ্ছে।’’
মাস দুই আগে পটনা থেকে কলকাতা আসার সময়ে ইন্ডিগোর বিমানের দেরি হয়েছিল। তাতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনা নিয়ে বিস্তর হইচই হয়। তদন্তে নামে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। সম্প্রতি সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের বিমানও দিল্লি থেকে ফেরার সময়ে আকাশে কিছুক্ষণ চক্কর কাটার পরে নামে।
আসলে সমস্যা দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে। প্রধান রানওয়ে রবিবার ছাড়া বাকি দিনগুলি সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হচ্ছে। নতুন আস্তরণ পড়ছে সেখানে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত জানান, মার্চ পর্যন্ত কাজ চলবে। তত দিন বেশির ভাগ সময়েই বিমান ওঠা-নামা করবে দ্বিতীয় রানওয়েতে। সল্টলেকের দিক থেকে এসে বিমান এই রানওয়েতে নামার পরে চট করে রানওয়ে খালি করার মতো রাস্তা (ট্যাক্সি-ওয়ে) নেই। আবার যে রাস্তা দিয়ে বিমান বেরিয়ে আসছে, সেই রাস্তা দিয়েই ঢুকতে হচ্ছে ওড়ার বিমানকেও। ফলে সেও আটকে থাকছে।
সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে একটি ট্যাক্সি-ওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়াতে আর্জি জানিয়েছে এটিসি অফিসারদের সংগঠন। সংগঠনের সম্পাদক কৈলাসপতি মণ্ডল জানান, দ্বিতীয় রানওয়ের সমান্তরাল ট্যাক্সিওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ালে আপাতত সমস্যা মিটবে। এ ক্ষেত্রে ওড়ার বিমানটি রানওয়ের ধারে দাঁড়াতে পারবে। নেমে আসা বিমান রানওয়ে থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ওড়ার বিমান ঢুকে আসতে পারবে। ফলে জ্বালানির পাশাপাশি বিমান ওঠা-নামার মধ্যেও অন্তত তিন মিনিট সময় বাঁচবে। এই দাবি জানিয়ে সংগঠন দিল্লিতে চিঠি দিয়েছে।
এক অফিসারের কথায়, ‘‘ট্যাক্সি-ওয়ের সমস্যার জন্য দ্বিতীয় রানওয়ে থেকে প্রতি ঘণ্টায় ১৫টির বেশি বিমান নামা-ওঠা করতে পারে না। এখন ২৬ থেকে ৩০টি নামা-ওঠা করাচ্ছি।’’ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর সঞ্জয় জৈন বলেন, ‘‘দ্বিতীয় রানওয়ের ধারণক্ষমতা বাড়াতে সমীক্ষা চালাচ্ছি। ভবিষ্যতে কলকাতায় উড়ান আরও বাড়বে বলে আশা। সেটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy