Advertisement
E-Paper

সেকরা পাড়ায় ধ্বংসস্তূপে একা বদ্রিকা পাখিরা! ওরা কী বেঁচে রয়েছে, উৎকণ্ঠায় পরিবার

একশো বছরের বাপ-ঠাকুরদার ভিটে ছেড়ে পরিবারকে নিয়ে হোটেলে আশ্রয় নিতে হয়েছে চিরঞ্জিৎবাবুকে। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফেরা হয়নি।

সোমনাথ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:১৪
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

মধ্য রাতে বাড়ির দেওয়ালে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সকালে তা নজরে আসেনি। বাজার থেকে ফিরে সেকরা পাড়া লেনের বাসিন্দা চিরঞ্জিৎ সেন জানতে পারেন, দ্রুত তাঁদের ঘর ছাড়তে হবে। কেন? এই প্রশ্নের জবাবে মেট্রো কর্তাদের বক্তব্য ছিল — মাটির নীচে কাজ চলছে। বাড়ি থেকে তেমন কিছু নিয়ে যেতে হবে না। জামাকাপড় নিলেই হবে। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। একশো বছরের বাপ-ঠাকুরদার ভিটে ছেড়ে পরিবারকে নিয়ে হোটেলে আশ্রয় নিতে হয়েছে চিরঞ্জিৎবাবুকে। কিন্তু তার পর আর বাড়ি ফেরা হয়নি।

ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই রয়ে গিয়েছে তাঁর প্রিয় পাখিগুলো। প্রায় ৬০-৭০টি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এখন অভিভাবকহীন। ওরা আদৌ বেঁচে রয়েছে কি না, তা জানা নেই। এলাকায় পাখিপ্রেমী হিসেবে চিরঞ্জিতের পরিচিতি রয়েছে। পাখি ছাড়াও চিরঞ্জিতের চারটি বিদেশি কুকুরও রয়েছে। তাদের কোনও রকমে উদ্ধার করে হোটেলে আনতে পেরেছে। কিন্তু জাপানিজ বদ্রিকা, রেড আই বদ্রিকার মতো রংবেরঙের পাখিগুলি ৯ নম্বর সেকরা পাড়া লেনের এখন একমাত্র ‘বাসিন্দা’।

মঙ্গলবার হোটেলে বসে চিরঞ্জিতের একটাই আক্ষেপ, “আমাদের এ ভাবে ভুল বোঝানো না হলে পাখিগুলোও উদ্ধার করে নিয়ে আসা যেত। আমার ঠাকুরদা, বাবাও পাখি ভালবাসতেন। আমিও পরে বিভিন্ন ধরনের পাখি নিয়ে আসি বাড়িতে। খুব খারাপ লাগছে, পাখিগুলো উদ্ধার করতে পারলাম না।”

আরও পড়ুন: বৌবাজার বিপর্যয় নিয়ে নবান্নে বৈঠক মমতার, ক্ষতিগ্রস্তদের ৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন মেট্রোকে

আরও পড়ুন: গমগমে সোনার বাজার যেন শ্মশান, পথে নামলেন বৌবাজারের দোকানিরা​

মধ্য কলকাতার একটি হোটেলে স্ত্রী বোন, বাবা-মা, ঠাকুরদা এবং চারটি কুকুরকে নিয়ে এই ক’দিন উৎকণ্ঠায় কেটেছে চিরঞ্জিতের। কিন্তু বাড়়ি ছেড়ে আর কত দিন? এই ভাবনাই এখন কুরে খাচ্ছে তাঁকে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বৌবাজার এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কয়েক জন। তাঁদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে এখনই ওই এলাকার বাড়িতে আপাতত বসবাস করা যাবে না। পরিবারের এক জন বাড়িতে ঢুকতে পারবেন এ কথা জানতে পেরে মুখে হাসি ফুটেছে চিরঞ্জিতের। তবে পাখিগুলো বেঁচে রয়েছে কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সেকরা পাড়ার এই যুবক।

Bowbazar Kolkata Metro Metro East-West Metro
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy