Advertisement
E-Paper

ডেকার্স লেনের পরীক্ষা নিলেন পুরকর্মীরা

শুক্রবার বারবেলায় শহরের ‘খাদ্য-সরণি’ ডেকার্স লেনে হঠাৎ এমনই শোরগোল। কারণ, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের নেতৃত্বে সেখানে ভেজাল খাবার ধরার অভিযান চালান পুরকর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০২:২৮
খুঁটিয়ে: খাবার পরীক্ষায় ব্যস্ত পুরকর্মীরা। রয়েছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

খুঁটিয়ে: খাবার পরীক্ষায় ব্যস্ত পুরকর্মীরা। রয়েছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। ছবি: রণজিৎ নন্দী

‘‘কী হলুদ ব্যবহার করছেন দেখান! এ সব লোককে খাওয়াচ্ছেন!’’— উত্তেজিত পুরকর্তা তখন রীতিমতো ধমক দিচ্ছেন দোকানদারকে। দোকানদারের মুখ কাঁচুমাচু। আমতা আমতা করে শুধু বলছেন, ‘‘আর হবে না স্যর! এ বারটা ছেড়ে দিন!’’ কিন্তু পুরকর্তা ছাড়তে নারাজ। খাওয়া থামিয়ে উৎসুক চোখে তখন দেখছেন অন্য দোকানের ক্রেতারা।

শুক্রবার বারবেলায় শহরের ‘খাদ্য-সরণি’ ডেকার্স লেনে হঠাৎ এমনই শোরগোল। কারণ, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের নেতৃত্বে সেখানে ভেজাল খাবার ধরার অভিযান চালান পুরকর্মীরা। এমনিতে টোস্ট-ঘুগনি-চা থেকে চপ-ফ্রাই-কাটলেট, চিকেন স্টু, মটন কোর্মা থেকে ফ্রায়েড রাইস, নুডলস, চিলি চিকেন আর সব শেষে ডাবল হাফ চা। ডেকার্স লেনের এই খানা খাজানা দেখে চমৎকৃত হওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। শুধু শহরের অফিসকর্মীরাই নন, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছেও খাবারের অম্লান ঠিকানা ডেকার্স লেন। কিন্তু সেই ডেকার্স লেনের খাবার খেয়েই সম্প্রতি কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ জমা পড়ে পুরসভায়। এমনিতে শহরের অনেক জায়গাতেই রাস্তার খাবারে ভেজাল মেশানো নিয়ে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু অন্য জায়গার সঙ্গে ডেকার্স লেনকে মিশিয়ে ফেলতে নারাজ পুরকর্তারা। কারণ, এই খাদ্য-সরণিতে শুধু যে রসনাতৃপ্তি হয় তাই নয়, এর সঙ্গে বাঙালি রসনার নস্ট্যালজিয়াও জড়িত। তাই জরুরি ভিত্তিতে অভিযান করে পুরসভা।

শুক্রবার বেলা সওয়া ১২টা থেকে অভিযান শুরু হয়। এক একটা দোকানে ঢুকেছেন পুরকর্তারা, খাবারের নমুনা পরীক্ষা করেছেন, আর প্রায় দমবন্ধ করে অপেক্ষা করেছেন সংশ্লিষ্ট দোকানের মালিক। নমুনা পরীক্ষায় পাশ করার পরে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন মালিকেরা, কয়েক জন আবার ডাহা ফেল! পুর তথ্য বলছে, গত দু’বছরে এই দিন নিয়ে মোট তিন বার ওই ঐতিহ্যশালী ‘খাদ্য-সরণি’তে অভিযান চালাল পুরসভা। খাওয়ার উপযোগী নয় এমন হলুদের গুঁড়ো, খাবারে মেশানো সিন্থেটিক রং-সহ একাধিক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এ দিন। সঙ্গে সাম্প্রতিক ফর্মালিনে চোবানো মুরগি বিতর্কের প্রেক্ষিতে দোকানগুলি থেকে কাঁচা, রান্না করা মুরগির নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে।

বাদ যায়নি ডেকার্স লেনের পানশালার রান্নাঘরও। সেখান থেকেও মুরগির কাঁচা মাংস সংগ্রহ করা হয়েছে। এক পুরকর্তা জানিয়েছেন, ওই সমস্ত নমুনা পুর পরীক্ষাগারে পাঠানোর পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে। ডেকার্স লেনের দু’টি দোকানের বিরুদ্ধে মামলাও করা হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কারণ, পুরকর্তাদের দাবি, গত বছর বলা সত্ত্বেও দোকান দু’টি খাবারে সিন্থেটিক রঙের ব্যবহার বন্ধ করেনি।

অতীনবাবু বলেন, ‘‘ডেকার্স লেনের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু এখানে খাবার খেয়ে অসুস্থতার খবর জমা পড়েছে পুরসভায়। প্রতি দিন এত লোক খেতে আসেন। খাবারে ভেজাল কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না।’’

Food Inspection Dacres Lane KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy