আপৎকালীন পরিস্থিতিতে আরও দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়তে এ বার ১০০ ডায়ালের সঙ্গে মোটরবাইক বাহিনীকে যুক্ত করতে চাইছে লালবাজার। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, শহরের প্রতিটি থানা এলাকায় একটি করে এমন বাইক থাকবে। তাতে চেপেই ১০০ ডায়ালে সাহায্যপ্রার্থীর কাছে দ্রুত পৌঁছে যাবে পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ইতিমধ্যেই চারটি ডিভিশনে একটি করে মোটরবাইক নিয়ে মহড়া শুরু হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে ৭২টি মোটরবাইক রাস্তায় নামবে এই কাজে।
পুলিশ সূত্রের খবর, যে সমস্ত জায়গায় পুলিশ বুথ বা কিয়স্ক রয়েছে, সেখানেই ওই ‘পিসিআর মোটরবাইক’ বাহিনীকে রাখা হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রতিটি বাইকে দু’জন করে পুলিশকর্মী থাকবেন। তাঁদের কাছে ট্যাব বা মোবাইল ফোন থাকবে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা ১০০ ডায়ালের কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি বিশদে জানাবেন। পুলিশকর্তাদের দাবি, দিল্লি ছাড়া দেশের অন্য কোথাও ১০০ ডায়ালের সঙ্গে যুক্ত মোটরবাইক পরিষেবা নেই। লালবাজার সূত্রের খবর, বর্তমানে ১০০ ডায়ালে ফোন করে কেউ সাহায্য চাইলে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় ৫৮টি পিসিআর ভ্যান (টহলদারি ভ্যান) রয়েছে। প্রয়োজন পড়লে হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াডকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। এ ছাড়া, প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে একটি করে ট্যাব দেওয়া হয়েছে। ১০০ ডায়ালের বিষয়ে কোনও তথ্য ওই ট্যাবে এসে পৌঁছলেই তা ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে কর্তব্যরত সার্জেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, বর্তমানে লালবাজারের ১০০ ডায়ালে প্রতিদিন গড়ে দু’হাজার মতো ফোন আসে। যার মধ্যে দুশোর বেশি ফোনের ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে যেতে হয়। তার জন্য বর্তমানে সময় লাগে আট থেকে দশ মিনিট। কলকাতা পুলিশের কর্তারা এই ‘রেসপন্স টাইম’ কমাতে চাইছেন। সেই জন্যই মোটরবাইক বাহিনীকে নামানো হচ্ছে, যাতে শহরের অলিগলি, যেখানে গাড়ি চালাতে অসুবিধা হয়, সেখানেও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারে পুলিশ। সেই সঙ্গে বাইকে গেলে যানজটেও বেশি ক্ষণ আটকে থাকতে হয় না। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, কলকাতার নগরপাল চাইছেন, এই ‘রেসপন্স টাইম’ কমিয়ে তিন থেকে চার মিনিট করতে।
পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে ১০০ ডায়ালে ফোন করে যিনি সাহায্য চাইছেন, তিনি তাঁর ভৌগোলিক অবস্থান না জানালেও প্রযুক্তির মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমের পুলিশ তা জেনে নিতে পারে। ফলে, খুব সহজেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হয়। আবার পুরো ফোন কলের রেকর্ডিং থাকার ফলে কেউ কোনও ভুল তথ্য দিলে তা-ও সহজে ধরা পড়ে যায়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)