Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Gold Smuggling

নিরাপত্তার ফাঁক গলে সোনা পাচার রেলপথে, গ্রেফতার চার

সম্প্রতি সোনা পাচারের খবর রেল রক্ষী বাহিনী এবং আরপিএফের কাছে আসার পরে স্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২০ ০২:৪৯
Share: Save:

কোভিড পরিস্থিতিতে হাওড়া স্টেশন চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খানিকটা ঢিলেঢালা ছিল। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফের ওই স্টেশনকে সোনা পাচারের করিডর করে তুলেছিল পাচারকারীরা। গোপন সূত্রে সেই খবর আসার পরে স্টেশনে নিরাপত্তা বাড়াতেই রেল রক্ষী বাহিনী ও স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধরা পড়ল চার সোনা পাচারকারী। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা ও রুপোর গয়না, যার বাজারদর এক কোটি দশ লক্ষ টাকা। রেলপুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শ্যাম সুন্দর, সঞ্জয় বর্মা, মণীশকুমার রজক ও অমিতকুমার বর্মা।

রেলপুলিশ জানিয়েছে, এদের মধ্যে শ্যাম এবং সঞ্জয় ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বাকি দুই অভিযুক্ত মনীশ এবং অমিত বিহারে থাকে। ধৃতদের কাছ থেকে ৩.১৪১ কেজি সোনা এবং ১৬.১৭৪ কেজি রুপো পাওয়া গিয়েছে। সব গয়না বাজেয়াপ্ত করেছে রেলপুলিশ।

কলকাতা বিমানবন্দরে ধরপাকড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে বছর পাঁচেক আগেই হাওড়া স্টেশনকে সোনা পাচারের করিডর হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেছিল পাচারকারীরা। ওই সময়ে পার্সেল ভ্যানে আসা কাপড়ের গাঁটরির ভিতরে লুকিয়ে সোনা পাচার করা হচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রেল রক্ষী বাহিনী কয়েক বার সেই সোনা ধরেও ফেলে। সেই খবর সামনে আসতেই কিছুটা সর্তক হয় পাচারকারীরা। ওই ভাবে সোনা পাচার বন্ধ করে দেয়।

রেলপুলিশ সূত্রের খবর, কোভিড আবহে স্পেশ্যাল ট্রেন চলা শুরু করতেই ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে পাচারকারীরা। কম ট্রেন চলায় স্টেশন চত্বরের ঢিলে নিরাপত্তাকে কাজে লাগিয়ে শুরু হয় পাচার। এ বার অন্য উপায়ে।

স্টেশনের দায়িত্বে থাকা রেলপুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘পার্সেলের মাধ্যমে পাচার যে হেতু করা যাচ্ছে না তাই ‘ক্যারিয়ারদের’ দিয়ে পাচার শুরু করেছিল। বিশেষ সূত্রে কয়েক বার খবর পেয়ে রেলকে জানানো হয়েছিল। পাচারকারীদের কিন্তু ধরা যায়নি।’’

সম্প্রতি সোনা পাচারের খবর রেল রক্ষী বাহিনী এবং আরপিএফের কাছে আসার পরে স্টেশনে নজরদারি বাড়ানো হয়। আরপিএফের তৈরি স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়। রেল রক্ষী বাহিনীর কাছে খবর আসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে পটনাগামী বিশেষ ট্রেনে সোনা-রুপো পাচার করবে ক্যারিয়ারেরা। ওই সন্ধ্যায় হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সে নজরদারি শুরু করে আরপিএফ ও এসটিএফের বিশেষ বাহিনী।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চার ব্যক্তিকে ন’নম্বর প্ল্যাটফর্মে পিঠে ব্যাগ নিয়ে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরতে দেখা যায়। তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে এসটিএফ। ব্যাগে কী আছে জানতে চাইলে তারা জানায়, কলকাতা থেকে সোনার গয়না নিয়ে পটনায় যাচ্ছে তারা। তখন তাদের থেকে পরিচয়পত্র এবং গয়না নিয়ে যাওয়ার প্রামাণ্য নথিপত্র দেখতে চাওয়া হয়। রেল রক্ষী বাহিনী জানায়, ওই ব্যক্তিরা তাদের পরিচয়পত্র দেখালেও বিপুল পরিমাণে সোনা-রুপো নিয়ে যাতায়াত করার কোনও নথি দেখাতে পারেনি। এর পরেই রেলরক্ষী বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে রেলপুলিশের হাতে তুলে দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE