(বাঁ দিকে) দেবাশিস কুমার। অরূপ বিশ্বাস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল যোগেশচন্দ্র আইন কলেজ এবং ডে কলেজে। সেই আবহেই যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমারকে। রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে নতুন সভাপতি করা হল। সূত্রের খবর, সরস্বতী পুজো নিয়ে বিতর্কের জেরেই এই রদবদল। এর আগে মধ্য কলকাতার চিত্তরঞ্জন কলেজে কোন্দলের মাঝেই পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রদবদল করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পরিচালন সমিতির সভাপতি পদ থেকে সরানো হয় জোড়াসাঁকোর বিধায়ক বিবেক গুপ্তকে। শ্যামপুকুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কলকাতা হাই কোর্টের সিদ্ধান্তে পুলিশ মোতায়েন করে যোগেশচন্দ্র কলেজের ক্যাম্পাসে আইন বিভাগের সরস্বতী পুজো হয়। যদিও ডে কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ রবিবার বিক্ষোভ দেখান কলেজের সামনে। তাঁরা অভিযোগ করেন, হাই কোর্টের নির্দেশ থাকলেও কলেজ ক্যাম্পাসে পুজো করতে পারেননি তাঁরা। তাঁদের পুজো করতে হয়েছে কলেজের পাশে একটি পার্কের সামনে। এই নিয়ে তাঁরা অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়ের দিকে। কলেজের বাইরে ব্যানার টাঙিয়ে প্রতিবাদ জানান পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, ‘নোংরা রাজনীতি’র কারণেই তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে পুজো করতে বাধ্য হয়েছেন। পঙ্কজকে ‘বিজেপির দালাল’ বলেও কটাক্ষ করা হয় ব্যানারে।
অন্য দিকে, কলেজের ভিতরে নিজের উদ্যোগে অধ্যক্ষ ছোট প্রতিমা বসিয়ে পুজো করেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ উড়িয়ে তিনি জানান, হাই কোর্টের নির্দেশে পুজোর জন্য কমিটি গড়ে দিয়েছেন তিনি। টাকাও দিয়েছেন। তার পরেও তাঁকে পুজো নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। সেই টাকা কোথায়, কী ভাবে খরচ হয়েছে, তা তিনি জানেন না। তাঁর কথায়, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, গাড়িবারান্দায় পুজো করতে হবে। সেই মর্মে কমিটি গড়ে টাকা দিয়েছি। কিন্তু তা দেওয়ার পরেও আমায় কিছু জানানো হয়নি। টাকা কোথায় খরচ করা হয়েছে, জানি না। এখন শুনছি কলেজের বাইরে পুজো হচ্ছে।’’ তার পরেই তিনি কলেজের ভিতরে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কর্তব্য রয়েছে। তাই নিজের উদ্যোগে পুজো করছি।’’ পড়ুয়ারা তাঁকে ‘বিজেপির দালাল’ বলেছে। সেই অভিযোগ উড়িয়ে পঙ্কজ বলেন, ‘‘আমার ৪০ বছরের শিক্ষকজীবনে এ রকম দশা হয়নি যে রাজনৈতিক দল করতে হবে। কে বা কারা কী বলল, তাতে কিছু যায়-আসে না।’’
এ সবের মাঝে যোগেশচন্দ্র কলেজের ক্যাম্পাসে আইন বিভাগের পুজো দেখতে গিয়ে পড়ুয়াদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, স্থানীয় সাংসদ মালা রায়। কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবিতে ‘বিচার চাই’ স্লোগান তুলেছিলেন তাঁরা। এর পরে ব্রাত্য কয়েক জন পড়ুয়াকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেই আবহেই যোগেশচন্দ্র ডে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদ থেকে দেবাশিসকে সরিয়ে বসানো হল অরূপকে।
দিন কয়েক আগে চিত্তরঞ্জন কলেজের পরিচালন সমিতিতেও রদবদল করা হয়। কেন তা করা হয়েছিল, সে সব নিয়ে বিশদে কিছু বলতে চাননি ব্রাত্য। শাসকদলের একটি অংশের বক্তব্য ছিল, টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হয়েছিল বিবেকের। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছাত্র সংসদের তহবিল খরচের বিষয়ে পরিচালন সমিতির অনুমোদন প্রয়োজন হয়। অভিযোগ, সেই অনুমোদন আটকে রাখা হচ্ছিল। অভিযোগ, সংঘাতের ফলে সরস্বতী পুজো বন্ধ হতে বসেছিল। এই পরিস্থিতিতেই হস্তক্ষেপ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy