Advertisement
E-Paper

চামড়ার বর্জ্যে বাহারি জিনিস তৈরি করতে উদ্যোগী কলেজ

শিক্ষক বুদ্ধদেব সিংহ জানান, বানতলার ট্যানারি এলাকা জুড়ে ডাঁই হয়ে থাকা চামড়ার ছাঁট ও গুঁড়ো তুলে এনে রজন, শিরীষ, ফটকিরির মতো সহজলভ্য রাসায়নিক মিশিয়ে মণ্ড তৈরি হচ্ছে। সেই মণ্ড রোলারের সাহায্যে চাদরে পরিণত করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগে দু’-তিন দিন। পরে সেই চাদর কেটেই তৈরি হচ্ছে ব্যাগ, জুতো, চপ্পল, এমনকী ঘরের নানা আসবাব।

সৃষ্টি: ফেলে দেওয়া জিনিসেই তৈরি হয়েছে ব্যাগ। নিজস্ব চিত্র।

সৃষ্টি: ফেলে দেওয়া জিনিসেই তৈরি হয়েছে ব্যাগ। নিজস্ব চিত্র।

শমীক ঘোষ ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:০০
Share
Save

পরিবেশ বাঁচাতে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের কথা বহু দিন ধরেই বলছেন পরিবেশবিদেরা। এ বার সেটাই হাতে-কলমে করে দেখাচ্ছে শহরের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পুনর্ব্যবহারই নয়, বর্জ্য থেকে নতুন সম্পদ তৈরির দিশাও দেখিয়েছে গভর্নমেন্ট কলেজ অব লেদার টেকনোলজি। ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের মতে, এই প্রকল্পে পরিবেশ যেমন বাঁচবে, বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করলে কাঁচা চামড়ার চাহিদাও কমবে। ফলে চামড়ার জিনিস সহজলভ্য হতে পারে।

কী ভাবে হচ্ছে এই কাজ? কলেজের

শিক্ষক বুদ্ধদেব সিংহ জানান, বানতলার ট্যানারি এলাকা জুড়ে ডাঁই হয়ে থাকা চামড়ার ছাঁট ও গুঁড়ো তুলে এনে রজন, শিরীষ, ফটকিরির মতো সহজলভ্য রাসায়নিক মিশিয়ে মণ্ড তৈরি হচ্ছে। সেই মণ্ড রোলারের সাহায্যে চাদরে পরিণত করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগে দু’-তিন দিন। পরে সেই চাদর কেটেই তৈরি হচ্ছে ব্যাগ, জুতো, চপ্পল, এমনকী ঘরের নানা আসবাব।

ট্যানারি থেকে ট্যাংরা, তিলজলা, তপসিয়া এলাকায় মারাত্মক দূষণের অভিযোগ উঠেছিল। আদালতের নির্দেশে বানতলায় বেশির ভাগ ট্যানারিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাতে পরিবেশ রক্ষা হয়নি বলেই অভিযোগ। পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, ট্যানারিতে চামড়ার চাদর তৈরি হওয়ার পরে প্রচুর কুচো চামড়া ও গুঁড়ো তৈরি হয়। সেগুলিকে ডাঁই করে রাখা হয়। কখনও কখনও সেই বর্জ্যের স্তূপে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর মতে, ট্যানারিতে ক্রোমিয়াম, সিসার মতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। বর্জ্য থেকে ওই সব রাসায়নিক পরিবেশে মেশে। বিশেষ করে এলাকার জলাশয় দূষিত হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমিকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। সে ক্ষেত্রে এমন প্রকল্প পরিবেশবান্ধব বলেই মনে করছেন তিনি। কলেজ অব লেদার টেকনোলজির প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছাত্রী সায়নী রায়ের বক্তব্য, ‘‘অধিকাংশ ট্যানারির ছাঁট ফেলার জায়গা নেই। তাই পরিবেশ রক্ষার ভাবনা থেকেই এই কাজের শুরু।’’

বস্তুত, এমন প্রকল্প এই কলেজ আগেও করেছে। শিক্ষক উদয়াদিত্য পাল জানান, দেড় দশক আগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তৎকালীন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের উৎসাহে ভেটকি মাছের ছাল থেকে ঘড়ির বেল্ট, ব্যাগ তৈরি করেছিলেন তাঁরা। পরে পরবর্তী কালে মুরগির ছাল থেকেও বিভিন্ন জিনিস প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এ সবই তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরে তৈরি হওয়া জিনিস। বাজারে একে সহজলভ্য করতে গেলে বাণিজ্যিকীকরণ প্রয়োজন। এর আগে কোনও প্রকল্প যে বাণিজ্যিকীকরণের মুখ দেখেনি, তা মেনে নিচ্ছেন উদয়াদিত্যবাবুও। তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রকল্পের বাণিজ্যিকীকরণ করলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ত।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক এবং পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই ধরনের কাজের বাণিজ্যিকীকরণের ক্ষেত্রে সরকারের এগিয়ে আসা দরকার।’’ তারঁর আক্ষেপ, আগের আমলে এর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সরকারেরর তরফে তেমন সাহায্য মেলেনি।

Government College Of Leather Technology Leather Items Leather

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।