Advertisement
০৪ মে ২০২৪

শিশুদের সুরক্ষায় হচ্ছে নয়া কমিটি

কলকাতা পুরসভার কিছু ওয়ার্ডে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াটাই দস্তুর। কোনও কোনও অঞ্চলে ছেলে-মেয়েদের কিছুদিন স্কুলে পাঠানোর পরেই কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৭
Share: Save:

কলকাতা পুরসভার কিছু ওয়ার্ডে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়াটাই দস্তুর। কোনও কোনও অঞ্চলে ছেলে-মেয়েদের কিছুদিন স্কুলে পাঠানোর পরেই কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও আবার যৌনপল্লির মেয়েদের শিশুরা যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছে মায়েদের পেশাগত কারণে।

এই সব ঘটনাই শিশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন করছে। কিন্তু আইন অমান্য হলেও এত দিন তা দেখার জন্য কেউ ছিল না। অথচ শিশুদের সামাজিক এই সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এ বার সেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে একটি করে শিশু সুরক্ষা কমিটি তৈরি করল কলকাতার শিশু কল্যাণ সমিতি। রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজ কল্যাণ দফতরের নির্দেশিকা মেনেই এই কমিটিগুলি তৈরি করা হয়েছে বলে খবর।

দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড রয়েছে যেখানে নাবালিকা বিবাহ আটকানো কিংবা শিশুদের পড়াশোনার বিষয়ে খুব একটা জোর দেওয়া হয় না। ফলে ওয়ার্ডেগুলির শিশুরা কম বয়সে স্কুলে না গিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট দোকানে কাজ করতে ঢুকে পড়ছে। অনেকে আবার ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাতেও শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজ করে চলেছে।

আবার প্রগতি ময়দান, তপসিয়া, তিলজলার মতো বেশ কিছু এলাকায় মেয়েদের আঠেরোর নীচেই বিয়ে দেওয়াটা দস্তুর। ফলে আইন সম্পর্কে জানলেও বাড়ির লোকজন মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। এ বার তাই এলাকার বরো চেয়ারম্যান, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, চিকিৎসক, জেলার লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটির এক সদস্য, এলাকার শ্রম-আধিকারিক, প্রতিটি থানার শিশু সহায়ক পুলিশকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহ স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করতে বলা হয়েছে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে। তিনিই হবেন এই কমিটির চেয়ারপার্সন। ১৬ জন সদস্যকে নিয়ে তৈরি এই কমিটি এ বার থেকে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এলাকার সমস্যা তুলে ধরবেন এবং সমাধান বার করবেন। আর সেই কাজে প্রশিক্ষণ দিতে ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয়ে গিয়েছে কর্মশালা।

শিক্ষক কিংবা ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের স্কুলের কোনও পড়ুয়া পরপর কয়েক দিন না এলেই তার খোঁজখবর নেবেন। অসুস্থ হলে অন্য কথা। তা ছাড়া অর্থনৈতিক, পারিবারিক বা অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করবেন তাঁরা। কোনও অসুবিধের কথা জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে কমিটির সদস্যরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

কোনও নাবালিকা স্কুলছুট হলেই খোঁজ নেওয়া হবে তার বিয়ের কোনও ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না। এতে নাবালিকাদের বিয়ে তো বন্ধ করা যাবেই, অনেকক্ষেত্রে বিয়ের নামে নারী পাচারও আটকানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪ এবং ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটিগুলি তৈরি করে কর্মশালাও করা হয়ে গিয়েছে। বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও কয়েক মাসের মধ্যে এই কমিটি তৈরি করা হবে বলেই আশাবাদী পুরসভা এবং কলকাতার শিশু কল্যাণ সমিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child welfare Committee Government Protect Child
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE