বিমানবন্দরের নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে অবিলম্বে নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। রাজ্যের পাশাপাশি সেই টাকার কিছু অংশ দেবে কেন্দ্রও।
গত কয়েক দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিতে বিমানবন্দরের ভিতরে যেখানে বিমান সারানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে, এয়ার ইন্ডিয়ার সেই হ্যাঙ্গারে জল জমে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, এর মধ্যে জল জমে যাওয়ায় এক দিন নিজেদের অফিসে ঢুকতে পারেননি ইঞ্জিনিয়ারেরা। একটি পুরনো যাত্রী বাসে অস্থায়ী অফিস বানাতে হয়েছে। অভিযোগ, ওই জলে ভেসে আসছে সাপও। বিমান সারানোর বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জলের মধ্যেই পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি আনন্দবাজারে প্রকাশিত হয়।
শুক্রবার বিমানবন্দর পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠক বসেছিল কলকাতা বিমানবন্দরে। কেন্দ্র সরকারের অধীনে দেশের সমস্ত বিমানবন্দরের এই পরামর্শদাতা কমিটির প্রধান, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। এ দিন কলকাতা বিমানবন্দর নিয়েই বৈঠক হয়। সেখানে সৌগতবাবু ছাড়াও ছিলেন দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী ও তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, রাজ্যের আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন অধিকর্তা অনিল শর্মা, বিমানসংস্থাগুলিকে নিয়ে তৈরি এয়ারলাইন্স অপারেটিং কমিটির প্রধান ক্যাপ্টেন সর্বেশ গুপ্ত, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামিম এবং আশপাশের সমস্ত পুরসভার প্রধানেরা।
সৌগতবাবু বলেন, ‘‘২০১৩ সালের জানুয়ারিতে কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল চালু হওয়ার পর থেকে কাচ ভাঙা, জল পড়া-সহ অনেক সমস্যা অতিক্রম করা গিয়েছে। কিন্তু, যেখানে বিমান দাঁড়ায়, সেখানের বেশ কিছু এলাকায় জল জমা নিয়ে তৈরি সমস্যার সমাধান করা যায়নি।’’ এর আগে ২০১২ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা পাওয়া যায়নি। সৌগতবাবু জানান, সল্টলেকের মহকুমাশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি পূর্ত দফতর, বিভিন্ন পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী সোমবার বৈঠক করবেন। কী ভাবে নতুন করে পরিকল্পনা করা যায়, তা ঠিক করা হবে। কত টাকা খরচ হবে, তা-ও দেখা হবে।
তবে, বিমানবন্দরের ভিতরে ১৪ থেকে ১৮ নম্বর হ্যাঙ্গার জুড়ে বিস্তীর্ণ যে এলাকা, একটু বৃষ্টি হলেও তার ৯০ শতাংশই জলের তলায় চলে যাচ্ছে। অনিল শর্মা জানান, পাম্প বসিয়ে সেখানের জল বাইরে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। পাম্প বসানো হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার তরফ থেকেও। কিন্তু, বেশি বৃষ্টি হলেই নিকাশি খালও জলে ডুবে যাচ্ছে। কৈখালির দিকে যে খালের ভিতর দিয়ে বিমানবন্দরের জল বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, তা-ও ভরে যাচ্ছে। ফলে, পাম্প করে বিমানবন্দরের বাইরে জল ফেলে দেওয়া হলেও অনেক সময়েই সেই জল ফিরে আসছে বিমানবন্দরের ভিতরে। আর এখানেই প্রয়োজন পরিকল্পনার।
এ দিন দীনেশ ত্রিবেদী প্রশংসা করেছেন কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের। বিমান চালাতে পারদর্শী এই সাংসদ জানান, সরকারি পরিচালনাতেও যে এমন সুন্দর বিমানবন্দর রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় তা কলকাতা দেখিয়ে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতাকে মডেল বিমানবন্দর করা যায়।’’ জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরের তুলনায় এ বার আয় এবং যাত্রীসংখ্যা দুই-ই বেড়েছে বিমানবন্দরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy