আসতে পারেননি বিশ্বকাপে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউর। তবে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনেই তাঁকে সাম্মানিক ডি লিট দেওয়ার বিষয়টি ঘোষিত হল। আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের উপস্থিতিতে বুধবার সমাবর্তনের আগে যাদবপুরের কোর্ট বৈঠক হয়। তখন হরমনপ্রীতকে ডি লিটের সুপারিশটি কার্যকর করা হয়। পরে সমাবর্তনে বিভিন্ন বিভাগের প্রথম স্থানাধিকারীদের পদক দিয়ে মঞ্চ ছেড়ে যান আচার্য। পিএইচ ডি প্রাপকদের একে একে ডিগ্রি প্রদানের আগে হরমনপ্রীতকে অনুপস্থিত অবস্থায় সাম্মানিক ডি লিট প্রদানের বিষয়টি জানান উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
যাদবপুরের রেজিস্ট্রার সেলিম বক্স মণ্ডল বলেন, “হরমনপ্রীত ডি লিট গ্রহণে সম্মত হয়েছিলেন। তাঁকে ডিগ্রি দেওয়াও হয়েছে। হরমনপ্রীতের সঙ্গে কথা বলে পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান করে কবে তাঁর হাতে এই সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হবে, তা জানাবেন উপাচার্য।”
এ বারের সমাবর্তনে ৩৭০ জন গবেষককে পিএইচ ডি, ২০০৪ জনকে স্নাতকোত্তর, ২১১২ জনকে স্নাতকের ডিগ্রি দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, “পরিকাঠামোর খামতি সত্ত্বেও উৎকর্ষ চর্চা ও জাতীয় শিক্ষা নীতির নানা শর্ত পূরণে লড়ছে যাদবপুর। রাজ্য সরকারের সাহায্যে পুরনো ভবন মেরামতি ও নিরাপত্তার কাজ হয়েছে। উৎকর্ষ চর্চায় সর্বতোভাবে পাশে প্রাক্তনীদের বিশ্ব ফাউন্ডেশন।”
দু’বছর বাদে স্থায়ী উপাচার্যের উপস্থিতিতে যাদবপুরের সমাবর্তন কার্যত অশান্তিবিহীন ভাবে হওয়া ছিল অবশ্যই ব্যতিক্রমী। বিজেপি-সঙ্ঘের ধ্বংসাত্মক শিক্ষানীতির প্রতিবাদে এসএফআইয়ের পোস্টার স্বাগত জানায় আচার্যকে। দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন করাতে এসএফআই তাঁকে স্মারকলিপিও দেয়। গবেষক, ছাত্রেরা ব্যাজ পরে উমর খালিদ, শারজিল ইমাম, গুলফিশা ফতিমাদের মুক্তির দাবিও জানান। তবে প্রধান অতিথি, এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান টি জি সীতারাম এবং আচার্য সি ভি আনন্দ বোস, দু’জনেই যাদবপুরকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন।
আচার্য তথা রাজ্যপাল কখন আসবেন, আদৌ আসবেন কিনা, তা নিয়ে গত কয়েক দিনে নানা বিভ্রান্তি ছিল। তাতে উপাচার্য অস্বস্তিতে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এ দিন সকালে মুম্বই থেকে কলকাতায় ফিরে মোটামুটি নির্দিষ্ট সময়েই যাদবপুরে ঢোকেন রাজ্যপাল। গত দু’বছর নানা বিতর্কের জেরে যাদবপুরে সমাবর্তনে আসেননি তিনি। আর এ দিন এসে কবি ওয়র্ডসওয়র্থকে আওড়ে যাদবপুরের বিরহে তাঁর দু’বছরের অদর্শন-তৃষার কথা বললেন। ডব্লিউ বি ইয়েটসকেও উদ্ধৃত করেন বোস। বলেন, “নতুন উপাচার্যের দক্ষ নেতৃত্বে যাদবপুর দারুণ ভাবে পাল্টে গিয়েছে। ইয়েটসের কবিতার ভাষায়, আ টেরিবল বিউটি ইজ বর্ন। যাদবপুর আমি বলে দিচ্ছি, দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)