Advertisement
E-Paper

এন্টালিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিবিদ্ধ যুবক

শহরের রাজপথে ফের প্রকাশ্যে গুলি। এ বার এন্টালির কনভেন্ট লেনে। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন এক যুবক। পুলিশ জানায়, রাত ১১টা নাগাদ এলাকার দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ৩ রাউন্ড গুলি চলার পাশাপাশি দু’দল পরস্পরকে লক্ষ করে বোমাও ছোড়ে তারা। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুস্তাকিম ওরফে বাবলু আশঙ্কাজনক অবস্থায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত চুনীলাল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিরা পলাতক। ঘটনার জেরে এলাকায় ফের প্রকাশ্যে এসেছে এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জনবহুল রাস্তায় গুলি চলায় ফের প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০০:০১
সংঘর্ষের পরে এলাকায় পুলিশি টহল। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

সংঘর্ষের পরে এলাকায় পুলিশি টহল। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের রাজপথে ফের প্রকাশ্যে গুলি। এ বার এন্টালির কনভেন্ট লেনে। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হন এক যুবক।

পুলিশ জানায়, রাত ১১টা নাগাদ এলাকার দু’দল দুষ্কৃতীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ৩ রাউন্ড গুলি চলার পাশাপাশি দু’দল পরস্পরকে লক্ষ করে বোমাও ছোড়ে তারা। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুস্তাকিম ওরফে বাবলু আশঙ্কাজনক অবস্থায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত চুনীলাল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিরা পলাতক। ঘটনার জেরে এলাকায় ফের প্রকাশ্যে এসেছে এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জনবহুল রাস্তায় গুলি চলায় ফের প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গরমে রেহাই পেতে বাড়ির বাইরে এসে বসেছিলেন বাবলু। অভিযোগ, তখনই এলাকার তিন যুবক কালো, বাপি এবং চুনিলালের নেতৃত্বে প্রায় জনা আটেক দুষ্কৃতী বাবলুর উপরে চড়াও হয়ে তার দিকে গুলি ছুড়তে থাকে। তিনটির মধ্যে দু’টি গুলির একটি লাগে বাবলুর পায়ে, অন্যটি পেটে। চপার দিয়েও বাবলুর মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই অপর পক্ষও দলবল নিয়ে আক্রমণ হাজির হয়। তার পরেই দু’দলে সংঘর্ষ বাধে। বিশাল পুলিশ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মাঝরাতে গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী মহম্মদ নাসিম বলেন, ‘‘গরম থাকায় পাড়ায় অনেকেই তখন রাস্তায় ছিল। হঠাৎই গুলির আওয়াজ শোনা যায়। এর পরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারি শুরু হয়। বোমাও পড়ে।’’ দুই গোষ্ঠীর লোকেরাই তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বহুদিনের বিবাদ ছিল। তার জেরেই এই ঘটনা। আগেও দুই গোষ্ঠীর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমুলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

জখম বাবলুর দাদা মহম্মদ কলিমুদ্দিন জানান, তাঁরা দু’জনেই তৃণমূল কর্মী। গত পুরভোটে তিনি স্থানীয় কাউন্সিলর দীপালি দাসের পোলিং এজেন্টও ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। কলিমুদ্দিনের কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরেই এলাকায় কালো এবং বাপির গোষ্ঠী আমাদের আক্রমণ করার চেষ্টা করছে। এলাকায় দু’টি নির্মীয়মাণ বাড়ির মধ্যে দেওয়াল তোলা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলাম। তার পরে আমাকে ওরা মারার হুমকি দেয়।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই নিয়ে গোলমালের জেরেই ওরা আমার ভাইকে আক্রমণ করে। আমি পুলিশকে সব জানিয়েছি।’’

অন্য দিকে, অভিযুক্ত বাপির দিদি গুড়িয়া বেগম বলেন, ‘‘বাবলু, কলিমুদ্দিন এবং আমার ভাই বাপি এবং তার দলবল সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী। কিছু বিষয় নিয়ে কলিমুদ্দিনদের সঙ্গে আগে থেকেই ভাইয়ের মতবিরোধ ছিল। এমনকী এ নিয়ে মাস ছ’য়েক আগেও ওরা
গুলি চালিয়েছে।’’

এ নিয়ে কী বলছেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব? স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর দীপালি দাস বলেন, ‘‘আমি মারামারির বিষয়ে কিছুই জানি না। এরা কারা, তা-ও জানি না। তাই কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’ অন্য দিকে, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন, ‘‘এই এলাকায় বেশির ভাগই তৃণমূলের সমর্থক। মঙ্গলবারের রাতের গোলমালে গুলিবিদ্ধ যুবকও আমাদের দলের সমর্থক। তবে যারা আক্রমণ করেছে, তারা কোন দলের তা বলতে পারব না।’’ তবে গুলিবিদ্ধ যুবক বা তার বাড়ির কেউ স্থানীয় কাউন্সিলরের পোলিং এজেন্ট ছিল না বলে দাবি করেছেন বিধায়ক।

পুরভোটের আগেও কাশীপুরে চলেছিল অবাধ গুলি-বোমাবাজি। এমনকী, পুরভোটের সময়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরপর এরকম ঘটনা রুখতে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘এ রকম ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। এখানেও টহলদারি পুলিশ ছিল। সেই কারণে সঙ্গে সঙ্গেই এক জনকে গ্রেফতারও করা গিয়েছে। বাকিরাও খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’

bullet Entally Group clash One youth Dipali Biswas Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy