Advertisement
০৫ মে ২০২৪

যুযুধান দলেরই দুই গোষ্ঠী, কসবায় বোমা

এক দিকে তৃণমূলের মন্ত্রীর অনুগামীরা, অন্য দিকে স্থানীয় কাউন্সিলরের সমর্থকেরা। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল কসবার নস্করহাট এলাকায়। আরও অভিযোগ, কয়েকটি বাড়ি ও ক্লাবেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

তাণ্ডব: একটি বাড়িতে ভাঙচুরের পরে।সোমবার, কসবায়। নিজস্ব চিত্র

তাণ্ডব: একটি বাড়িতে ভাঙচুরের পরে।সোমবার, কসবায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫৪
Share: Save:

এক দিকে তৃণমূলের মন্ত্রীর অনুগামীরা, অন্য দিকে স্থানীয় কাউন্সিলরের সমর্থকেরা। এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঘিরে বোমাবাজির অভিযোগ উঠল কসবার নস্করহাট এলাকায়। আরও অভিযোগ, কয়েকটি বাড়ি ও ক্লাবেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে নস্করহাটের দক্ষিণপাড়া এবং নারকেলবাগানে। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী জাভেদ খানের অনুগামীদের অভিযোগ, তাঁদের উপরে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছেন স্থানীয় ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের অনুগামীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুশান্তবাবু। ঘটনাস্থল থেকে বোমা উদ্ধার হলেও বোমাবাজির তত্ত্ব মানতে চায়নি পুলিশও।

পুলিশ সূত্রের খবর, নারকেলবাগান এলাকায় একটি ক্লাবে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী জাভেদ খান সপ্তাহে এক দিন জনসংযোগ করার জন্য বসেন। ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ সুশান্ত ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত কৃষ্ণ, শানু, রাকেশ, বুবাই-সহ জনা দশেক যুবক ক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে জানলার কাচ ভাঙতে শুরু করেন। মন্ত্রীর নাম করে গালিগালাজও করা হয়। বাসিন্দারা বাধা দিলে দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি হয়। ভেঙে দেওয়া হয় একটি খাবারের দোকান। সদস্যদের দাবি, মন্ত্রীর নাম লেখা সাইনবোর্ড ভেঙে দেন ওই যুবকেরা। ক্লাবের পাশের বাসিন্দা পাপ্পু সাউ ও তাঁর স্ত্রী বাসন্তীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন মনোজিৎ ও বীণা মণ্ডল। সোমবার, কসবায়। নিজস্ব চিত্র

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর পরে ক্লাব থেকে কিছু দূরে মনোজিৎ মণ্ডল নামে এক যুবক তথা মন্ত্রীর অনুগামী বলে পরিচিতের বাড়িতে হামলা চালায় ওই দলটি। মনোজিৎ বলেন, ‘‘আমি আর আমার স্ত্রী ঘরে ছিলাম। আচমকাই ওরা এসে কাচ ভেঙে দেয়। শাবল দিয়ে দেওয়াল এবং ইট দিয়ে অ্যাসবেস্টসের ছাদ ভাঙারও চেষ্টা করে। এক বার গুলিও চলে। বাইরে বেরোলে মরেই যেতাম। সবাই ছিল সুশান্ত ঘোষের অনুগামী।’’

এতেই শেষ নয়। সোমবার ভোরে নস্করহাটের রায়পাড়ায় মন্ত্রীর অনুগামী রবি রায়ের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবাবু বলেন, ‘‘টেগোর পার্কে আমার দোকান রয়েছে। সে জন্য অনেক ভোরে উঠি। হঠাৎই এ দিন ঘরের পিছনে দু’বার বোমা ফাটার শব্দ শুনি। বেরিয়ে দেখি, চারটে বোমা পড়ে রয়েছে।’’ যদিও পুলিশের দাবি, কোনও বোমা ফাটেনি। তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে।

রবিবাবুর অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলে দেবতনু ওরফে ভুন্ডুল জাভেদ খানের খুবই ঘনিষ্ঠ। কিন্তু সুশান্তের লোকেরা ছেলেকে ‘গোষ্ঠী’ বদল করতে চাপ দিয়েছিল। রাজি না হওয়ায় তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে সুশান্ত জেলে ঢুকিয়ে দেয়।’’ পুলিশ জানিয়েছে, এক জনকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে আপাতত জেলে আছেন দেবতনু।

যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর সুশান্তবাবু বলেন, ‘‘রাত ৩টের সময়ে যাঁরা এ ভাবে ঘুরে বেড়ান, তাঁরা সমাজবিরোধী হতে পারেন, দলের কর্মী নন। দল আমাকে এখানকার সভাপতি করেছে। আমার কোনও অনুগামী নেই। সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে রাজনীতি করেন। পুলিশ পদক্ষেপ করবে।’’ অন্য দিকে জাভেদ খান বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Group Clash TMC Bombing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE