Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus Lockdown

জিম বন্ধ তিন মাস, সঙ্কটে সব পক্ষ

আনলক-১ পর্বে যখন অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তখন জিম খোলারও দাবি জানিয়ে একাধিক জায়গায় অবস্থান করেছেন জিমের প্রশিক্ষক ও কর্মীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুজিষ্ণু মাহাতো
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২০ ০৫:৩৭
Share: Save:

পিঠের ব্যথার সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শেই জিমে যাওয়া শুরু করেছিলেন গড়িয়ার বাসিন্দা সোনালি ভট্টাচার্য। ছ’মাসে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ার পরে জিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফের ফিরে এসেছে ব্যথা। এক দিন ব্যথায় শয্যাশায়ীও হয়ে যান তিনি। চেম্বার বন্ধ থাকায় যেতে পারেননি চিকিৎসকের কাছেও।

নাকতলার একটি জিমে প্রশিক্ষকের কাজ করেন অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়। জিম বন্ধ। বেতনও বন্ধ তিন মাস। লকডাউন শিথিল হলেও ক্ষতির ধাক্কা সামলে জিম খুলবে কি না, খুললেও তাঁর কাজ থাকবে কি না— জানেন না অর্ণব।

লকডাউনে জিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন দু’রকম সমস্যায় শহরের অজস্র বাসিন্দা। লকডাউনে অনেক ক্ষেত্রের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ‘ফিটনেস ইন্ডাস্ট্রি’, যার অঙ্গ জিমন্যাসিয়াম। মার্চের শেষ থেকে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য মানুষের রোজগার তলানিতে। বহু জিম বন্ধ হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছেন মালিকেরা।

দক্ষিণ কলকাতায় সাতটি জিম রয়েছে শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘আনলক-৩ পর্বে জিম খুলতে পারে। সেটা হিসেব করলে দাঁড়ায় জুলাইয়ে। এত দিন রোজগার বন্ধ। এই ক্ষতির ধাক্কা সামলে ক’টা জিম ফের খুলতে পারবে সন্দেহ আছে।’’

আনলক-১ পর্বে যখন অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তখন জিম খোলারও দাবি জানিয়ে একাধিক জায়গায় অবস্থান করেছেন জিমের প্রশিক্ষক ও কর্মীরা। তেমনই একটি ছবি ঘুরেছে ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তাতেই অনেকে ডন-বৈঠক দিচ্ছেন। মুখে মাস্ক। আশপাশে দাঁড়িয়ে যাঁরা, তাঁদের হাতের পোস্টারে জিম খোলার দাবি। এই ছবি দেখে অনেকেই মজার ছলে শেয়ার করেছেন। তবে ছবিতে যাঁরা রয়েছেন, নানা জিমে কাজ করা সেই প্রশিক্ষক, কর্মীরা বলছেন, ‘‘আমরা যা করছি তা হয়তো হাস্যকর ঠেকবে অনেকের কাছে। তবে আমাদের অবস্থাটা বুঝলে কেউ হাসতেন না।’’ এমন অবস্থান হয়েছে বাঘা যতীন, যাদবপুর, পাটুলি, মৌলালি, সল্টলেক, হাওড়ায়।

যাঁরা জিমে শারীরচর্চা করতে যান, জিম খোলার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরাও। কর্পোরেট সংস্থার কর্মী সোনালিদেবী বলছেন, ‘‘শারীরচর্চা করতে না-পেরে আমার পিঠের ব্যথা ভয়ঙ্কর বেড়ে গিয়েছে। জিমটা আমাদের মতো অনেকের প্রয়োজন। রেস্তরাঁ, বিউটি পার্লার যদি খুলতে পারে, জিম নয় কেন?’’ ডাক্তারের পরামর্শে জিমে গিয়েই ওজন কমেছিল ক্যামেলিয়া মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলছেন, ‘‘এখন তো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। শারীরচর্চা করতে না-পারলে তা কী করে সম্ভব?’’

তবে সরকার অনুমতি দিলে জিম চালু হওয়ার পরেও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শহরের জিম মালিকদের ফোরামের অন্যতম সদস্য গগন সচদেব। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমরা বিদেশের অনুসরণে নিয়মাবলী তৈরি করেছি। দূরত্ব বজায় রাখার জন্য জিমে প্রতি ঘণ্টায় যত জন শারীরচর্চা করতেন, সেই সংখ্যা তিন ভাগের এক ভাগ করে দেওয়া হবে। জিমে ঢোকার আগে এবং প্রতি ঘণ্টার স্লট শেষে পুরো জিম জীবাণুমুক্ত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Gymnasium
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE