Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
dengue death

Dengue Death: ডেঙ্গিতে মৃত্যু মানছে স্বাস্থ্য দফতর, তথ্যই নেই পুরসভায়!

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেও খবর, চলতি বছরে কলকাতা পুর এলাকায় এটিই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যু। ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার বৈঠক।

বিশাখ মুখোপাধ্যায়।

বিশাখ মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ০৫:২৮
Share: Save:

শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার মৃত্যু হল এক স্কুলছাত্রের। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির কথা লেখা রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেও খবর, চলতি বছরে কলকাতা পুর এলাকায় এটিই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যু। যদিও মৃত্যুর কারণ যে ডেঙ্গিই, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি কলকাতা পুরসভা!

ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে আজ, শুক্রবার স্বাস্থ্য, সেচ, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং সমস্ত জেলাশাসকের সঙ্গে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন বলেও খবর।

মৃতের নাম বিশাখ মুখোপাধ্যায় (১২)। সে থাকত পুরসভার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে, কালীঘাটের মহিম হালদার স্ট্রিটে। তার বাবা বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় জানান, গত শুক্রবার বিশাখের জ্বর আসে। ক্রমাগত ওঠানামা করছিল জ্বর। রবিবার কমলেও সোমবার ফের জ্বর আসে। সে দিন স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানো হয়। ডেঙ্গি পরীক্ষাও করানো হয়। মঙ্গলবার বিকেল থেকে নেতিয়ে পড়ায় রাতে আনন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

ওই হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক সুমিতা সাহা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে এলেও ওই কিশোরকে দেখেই তাঁদের মনে হয়েছিল, ডেঙ্গি হেমারেজিক শক সিন্ড্রোম রয়েছে। ভর্তির সময়ে বিশাখের হাত-পা ঠান্ডা ছিল।নাড়ির গতি, রক্তচাপ খুবই কম ছিল। সুমিতা বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করে দিই। ফের রক্ত পরীক্ষা হয়। রাতে জানতে পারি, প্লেটলেট ৪০ হাজারে নেমে গিয়েছে।’’ যদিও ওই নেগেটিভ রিপোর্টে প্লেটলেটের মাত্রা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার।

বুধবার সকালে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও, বিকেলের দিকে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিশাখকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র বিশাখ পড়াশোনায় বরাবর ভাল ছিল। তার মৃত্যুতে এলাকাতেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাবা বিশ্বরূপ বেসরকারি সংস্থার কর্মী। যে হাসপাতালে মারা যায় বিশাখ, সেই গোষ্ঠীরই রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের শাখায় কর্মরত তার মা। একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে কার্যত বাক্যহারা ওই দম্পতি। পুর পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ উগরে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বহু জায়গায় আবর্জনা জমে থাকে। সন্ধ্যায় মশার উৎপাত বাড়ে।

স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আইনি জটিলতার কারণে পরিত্যক্ত বাড়িতে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ঢুকতে পারেন না। ফলে মশা বাড়ছে।’’ ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের দাবি, ‘‘ছেলেটির বাড়ির পাশেই পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র। অথচ, জ্বর হওয়ার পরেও তার পরিবার সেখানে জানায়নি বা রক্ত পরীক্ষা করায়নি। ফলে পুরসভার কাছে তথ্যই নেই। পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস শুক্রবার সেখানে যাবেন।’’ তাঁর আরও দাবি, গত বছর এই সময়ে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০০। চলতি বছরে ১৮৫। অতীন বলেন, ‘‘ঘন জনবসতিপূর্ণ ওই এলাকার অনেক বাড়িই বন্ধ। বাড়ি ভেঙে ঢুকে পরিষ্কার করার পরিকাঠামো আমাদের নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue death KMC Health Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE