অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার দায়ে এক গৃহশিক্ষককে তিন বছরের কারাদণ্ড দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে। হাই কোর্টের নির্দেশ, আগামী ৩০ দিনে মধ্যে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে ওই গৃহশিক্ষককে। নিম্ন আদালত ওই শিক্ষককে বেকসুর খালাস করেছিল। সেই রায় খারিজ করল হাই কোর্ট।
২০১৭ সালের ১৭ জুলাই দোষীর বাড়িতে টিউশন নিতে যায় ১৪ বছরের ছাত্রী। তখন সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। নির্যাতিতা জানায়, পড়ানোর ফাঁকে তাকে একা ডেকে নেন গৃহশিক্ষক। তার টিশার্টের উপর লেখা অংশে হাত দেন বলে অভিযোগ। এর ফলে কিশোরী অস্বস্তিতে পড়ে। সে সময় শিক্ষকের স্ত্রী রান্নাঘরে ছিলেন। মেয়েটি বাড়ি ফিরে তার মাকে বিষয়টি জানায়। পরের দিন উল্টোডাঙা মহিলা থানায় এফআইআর দায়ের করে ছাত্রীর পরিবার।
পুলিশ তদন্ত করে। পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। ২০১৯ সালে শিয়ালদহ আদালত পকসো আইনের ১০ নম্বর ধারা অনুযায়ী শিক্ষককে বেকসুর খালাস করে। কারণ হিসাবে নিম্ন আদালত জানায়, নির্যাতনের অভিযোগে এফআইআর করতে দেরি হয়েছে। নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে সম্মতি দেননি তার মা। তা ছাড়া অন্য পড়ুয়াদের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়নি।
নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পরিবার হাই কোর্টে যায়।। পরিবারের আইনজীবীর সওয়াল, পকসো আইনের ২৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তকে নিজেকে প্রমাণ করতে হয় যে, তিনি নির্দোষ। মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়নি বলে খারিজ করতে পারে না নিম্ন আদালত।
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতা যা বলেছে তা স্পষ্ট। কোনও সময় সে বয়ান পাল্টায়নি। তার বয়ান বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে। কিশোরীর সঙ্গে যা ঘটেছে, তার জন্য মেডিক্যাল পরীক্ষা অপরিহার্য নয়। এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে হাই কোর্ট। পকসো আইনের ৮ নম্বর ধারায় গৃহশিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারপতি। তিনি তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন দোষীর। ৩০ দিনের মধ্যে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে গৃহশিক্ষককে।