Advertisement
E-Paper

পুলিশের ভয় উড়িয়ে দাপাল ‘রংবাজেরা’

পাড়ায় পাড়ায় মোতায়েন থাকবে পুলিশ। মহিলাদের নিরাপত্তায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। দোলের দিন বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে এমনই নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৭
হুল্লোড়: মুচিবাজারে রাস্তাতেই রং মাখানোর উল্লাস। ছবি: সুমন বল্লভ

হুল্লোড়: মুচিবাজারে রাস্তাতেই রং মাখানোর উল্লাস। ছবি: সুমন বল্লভ

পাড়ায় পাড়ায় মোতায়েন থাকবে পুলিশ। মহিলাদের নিরাপত্তায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। দোলের দিন বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে এমনই নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু বাস্তবে যেন পুলিশের সব আশ্বাসই ধুয়ে গেল। ফলে প্রশ্ন উঠল পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। অনেক জায়গাতেই চরম বিশৃঙ্খলা হল। হেনস্থার থেকে রেহাই পেলেন না মহিলারাও। এমনকি, শাসক দলের কাউন্সিলরের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগও উঠল।

দোলের বিকেল থেকেই একাধিক ঘটনা সামনে আসতে থাকে। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসে বিকেলে স্বামীর সঙ্গে এক বিপণিতে যাচ্ছিলেন যাদবপুরের বাসিন্দা, অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণী। মুকুন্দপুরে অটো থেকে নামার পরে তরুণী খেয়াল করেন, কেউ তাঁর কোমরে হাত দিচ্ছে। কাঁধের ব্যাগটিও যেন টানা হচ্ছে। দম্পতি বুঝতে পারেন দুই বাইক আরোহীর কীর্তি। তরুণীর স্বামী পিছন থেকে ওই বাইক আরোহীর হাত ছাড়িয়ে দেন। পালাতে গিয়ে বাইক নিয়ে পড়ে যায় দুই যুবক। তরুণীর চিৎকার শুনে পূর্ব যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই বাইকের সওয়ারি পালিয়ে যায়। তবে ওই বাইকের চালক উজ্বল হালদার গ্রেফতার হয়। ওই যুবকের বিরুদ্ধে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

অবশ্য তরুণীর স্বামীর দাবি, নিরাপত্তার কারণেই তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তরুণী পুলিশকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। তাঁর স্বামী বলেন, ‘‘ওই পথ দিয়ে প্রায়ই স্ত্রীকে নিয়ে যাতায়াত করি। এই ঘটনার পরে স্ত্রী-ও মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। ভয়ে আর অভিযোগ দায়ের করিনি।’’

আবার কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুখদেব চক্রবর্তীর বাড়িতে জলের দাবি জানাতে এসে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে রং খেলা কয়েক জন তরুণ-তরুণীর বিরুদ্ধে। সুখদেববাবু অবশ্য পুলিশকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে ওই তরুণ-তরুণীরা আসেন। ‘‘দ্রুত জলের ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা স্নান করব’’— এই বলে তাঁরা চেঁচাতে শুরু করেন। দেওদার স্ট্রিটে একটি পুরনো গঙ্গার জলের পাইপলাইন বন্ধ থাকায় জল না পেয়ে তাঁরা কাউন্সিলরের বাড়িতে এসেছেন বলে জানান। অভিযোগ, এর পরে ওই তরুণ-তরুণীরা কাউন্সিলরের বাড়ির সামনের কয়েকটি মোটরবাইক রাস্তায় ফেলে দেন। বাড়ির গায়ে লাগানো টেলিফোন বাক্সও ভাঙচুর করা হয়। বালিগঞ্জ থানার পুলিশ কয়েক জনকে থানায় নিয়ে গেলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পাইপলাইনটি সারাতে কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতরকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছি। তবু ওই দুষ্কৃতীরা রং মেখে আমার বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালিয়েছে।’’ কলকাতার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (১) জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি নেই। যেখানেই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিলিয়ে বিশৃঙ্খলা, মদ্যপান করে গাড়ি চালানো-সহ নানান অভিযোগে ১৬২৩ জন গ্রেফতার হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

অন্য দিকে কলকাতার পাশাপাশি বেলঘরিয়ার রানি পার্কের কাছে তথ্য প্রযুক্তিকর্মী সৌরভ বিশ্বাস ও তাঁর বন্ধুকে লক্ষ্য করে রং ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, সৌরভবাবুরা স্কুটিতে চড়ে যাচ্ছিলেন। তখন কয়েক জন যুবক বালতি থেকে রং মেশানো জল সৌরভবাবুদের গায়ে ঢেলে দেয়। তাঁদের মুখে বেলুন ছুঁড়ে মারা হয়। স্কুটি উল্টে জখম হন দু’জনেই। অভিযোগ, এর পরে ওই যুবকেরা সৌরভদের তুলে ধরে মারধর করে, জামা ছিঁড়ে দেয়। সৌরভবাবু বলেন ‘‘যারা মেরেছে প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থায় ছিল।’’ তবে সৌরভবাবুরা কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

Holi Holi Celebration Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy