Advertisement
E-Paper

চটজলদি রাস্তা সারাই, বাতিল ছুটি

শহরের রাস্তা সারাইয়ের কাজ সময়ে হয়নি কেন? কেন মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করাতে হবে? এ বিষয়ে পুরসভার অফিসার, ইঞ্জিনিয়ারেরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৮
তড়িঘড়ি সারানো হচ্ছে হরিদেবপুরের মহাত্মা গাঁধী রোড।

তড়িঘড়ি সারানো হচ্ছে হরিদেবপুরের মহাত্মা গাঁধী রোড।

মুখ্যমন্ত্রীর এক ধমকেই কাজ হল। শহরের রাস্তা সারাতে প্রায় ‘যুদ্ধকালীন’ তৎপরতা শুরু করে দিল কলকাতা পুরসভা। শনিবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রবিবার ছুটির দিন হলেও রাস্তা সারাইয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারকে কাজ করতে হবে। শুক্রবারই পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খানাখন্দ বুজিয়ে রাস্তা মসৃণ করতে হবে। শনিবার তিনি জানান, সেই লক্ষ্যেই কাজ এগোচ্ছে। আপাতত শহরের ৪১৯টি খারাপ রাস্তার তালিকা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে পুরসভার অধীনে রয়েছে ৪০৩টি। এ দিন বিকেল পর্যন্ত ২৯০টি সারানো হয়েছে। তবে এমন কথাও উঠছে যে, শহরের যে সব রাস্তা পুরসভার নয়, সেগুলি নিয়েও ভাবা দরকার। প্রসঙ্গত, ই এম বাইপাস, রেড রোড এবং খিদিরপুরের বেশ কিছু রাস্তা কেএমডিএ, পূর্ত দফতর ও বন্দরের। কলকাতায় এমন কিছু সেতু রয়েছে, যা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে এইচআরবিসি এবং পরিবহণ দফতর। সেই সমস্ত রাস্তাও সারানো জরুরি বলে মনে করছে পুর প্রশাসন। কাজের সমন্বয়ের জন্য পুলিশ, সিইএসসি, পুরসভা এবং অন্য এজেন্সিকে নিয়ে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও তৈরি করা হয়েছে বলে জানান
পুর কমিশনার।

এখন প্রশ্ন হল, শহরের রাস্তা সারাইয়ের কাজ সময়ে হয়নি কেন? কেন মুখ্যমন্ত্রীকে সতর্ক করাতে হবে? এ বিষয়ে পুরসভার অফিসার, ইঞ্জিনিয়ারেরা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। যদিও পুর কমিশনার দফতরের কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, রাস্তা সারাইয়ের কাজে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা যাবে না। সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে। শুক্রবার থেকে তিনি নিজে ওই কাজ তদারকি করতে একাধিক জায়গায় গিয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এ দিন চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, সার্কাস অ্যাভিনিউ, পর্ণশ্রী, বীরেন রায় রোড (পশ্চিম), হরিদেবপুর, সন্তোষ রায় রোড-সহ আরও অনেক এলাকায় রাস্তা সারাই করা হয়। একই সঙ্গে পুরসভার হট মিক্সিং প্ল্যান্টে মালমশলার কোনও ঘাটতি যাতে না থাকে, তা-ও দেখা হচ্ছে। এ দিন পুর অফিসারেরা বেহালার গরাগাছি এবং বেলেঘাটা সংলগ্ন পামারবাজার প্ল্যান্টে গিয়ে রাস্তা তৈরির উপাদানের ছবিও তুলে রেখেছেন।

রাস্তার খানাখন্দ খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে। উত্তর থেকে দক্ষিণ— কলকাতার রাস্তা জুড়ে খানাখন্দের তালিকা তৈরি করছে পুলিশও। তা দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। পুর কমিশনার জানান, এ দিন পুলিশ আরও একটি তালিকা দিয়েছে, যাতে ৫০টির মতো জায়গার কথা বলা হয়েছে।
দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে তা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া, পুরসভার নিজস্ব দল এ দিন জওহরলাল নেহরু রোড, এনএসসি বসু রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বিবেকানন্দ রোড, কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিট, মানিকতলা, বেলেঘাটা, নারকেলডাঙা মেন রোড, রবীন্দ্র সরণি, এসএন ব্যানার্জি রোড এবং এ জে সি বসু রোড পরিদর্শনে যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় সব রাস্তাতেই খানাখন্দ নজরে পড়েছে। সে সব কাজও দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার। তিনি জানান, শহরে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে অনেক সংস্থা। এ বার থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বর্ষার সময়ে কোনও রাস্তা খুঁড়তে দেওয়া হবে না।

তারাতলা মোড়ের খানাখন্দ অবশ্য এখনও রয়েছে। নিজস্ব চিত্র

শুক্রবারই পুর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, কোন রাস্তা কোন ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং কোন ঠিকাদার সেই কাজ করেছেন— সেই সমস্ত তথ্য সাইনবোর্ডে লিখে সংশ্লিষ্ট রাস্তায় টাঙিয়ে দেওয়া হবে। পুরসভা চায়, এ শহরে অন্য যে সব সংস্থার তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন রাস্তা রয়েছে, তারাও তা করুক। পুর ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, ট্রামলাইনের রাস্তা খারাপ হয় বেশি। শিয়ালদহ সেতুর উপরে প্রায়ই দেখা যায়, ট্রামলাইনের জন্য রাস্তা খারাপ হয়েছে। সেখানেও নজরদারি জরুরি। পুলিশের এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘সব সংস্থা সারাইয়ে নজর দিলে শহরের রাস্তা ভাল থাকবে।’’

Road Repairing Kolkata Municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy