তখন সে ৪৮ দিনের অন্তঃসত্ত্বা। শব্দ-যন্ত্রণা আটকাতে ঘরের জানলা-দরজা বন্ধ করে মোটা কাপড় দিয়ে তার মাথা-কান-গলা পেঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। তবু রেহাই মেলেনি।কয়েক দফায় অজ্ঞান হওয়ার পরে কালীপুজোর পরদিন তার পেটে থাকা বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। আওয়াজের ভয় এবং সন্তান হারানোর শোক এতটাই চেপে বসেছিল ওর যে দ্রুত পেট পরিষ্কার করিয়ে নেওয়াও যায়নি। দিন দশেক খাওয়া, মল-মূত্র ত্যাগ— প্রায় সবই বন্ধ ছিল তার। কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দিচ্ছিল না সে। সর্বক্ষণ চোখ দিয়ে জল গড়াত। মাস খানেকের মধ্যেই পায়োমেট্রা রোগ হয়। আদরের রানিকে আর বাঁচাতে পারেননি বেহালার বাসিন্দা সম্রাট বর্ধন এবং তাঁর স্ত্রী দময়ন্তী।
কালীপুজো, দীপাবলি বা ছটের সময় একাংশের আনন্দের নামে শব্দবাজির তাণ্ডবের এমন দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা রয়েছে পোষ্যের প্রায় সব অভিভাবকেরই। কেউ সর্বক্ষণ পোষ্যকে জড়িয়ে ধরে বসে থেকেও তার হৃদ্রোগে
আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু আটকাতে পারেননি। কেউ আবার প্রথম প্রথম ঘুমের ওষুধ দিয়ে কিছুটা ভাল রাখার চেষ্টা করলেও পরে নিরুপায় হয়ে একের পর এক ফোন করে যান চিকিৎসককে। তার পরে থানায়। কিন্তু সুরাহা মেলে না। তবে চলতি বছরে কলকাতা হাইকোর্ট সমস্ত রকমের বাজি বিক্রি এবং পোড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরে পোষ্যের যন্ত্রণামুক্তির আশা দেখছেন অভিভাবকদের অনেকেই। আবার পূর্ব অভিজ্ঞতা মনে করে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কাও!