টাকা-গয়না চেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপরে অত্যাচার করছেন বলে রবিবারই মা-বাবাকে জানিয়েছিল তরুণী। অবিলম্বে শ্বশুরবাড়িতে এসে তাই মা-বাবাকে কথা বলতে বলেছিল পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মা-বাবা জানলেন, মেয়ে নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম সনিয়া পাল (১৭)। তদন্তকারীদের অনুমান, সনিয়াকে গলায় ফাঁস দেওয়া হয়। তার পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ সনিয়ার স্বামী সোমনাথ, শ্বশুর রতন ও পিসেমশাই দিলীপ মিত্রকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, এক বছর আগে সোদপুরের রমেশ সামন্তর মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় বরাহনগরের সোমনাথের। অভিযোগ, সনিয়া নাবালিকা জেনেও তাকে বিয়ে করেন সোমনাথ। বিয়ের পর থেকেই দেনাপাওনা নিয়ে শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। বাড়ির কাছেই সোমনাথের মাংসের দোকান রয়েছে।
সনিয়ার বাবা রমেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘রবিবার রাতেই মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, সোনার আংটি আর আসবাবের জন্য ওকে মারধর করা হচ্ছে।’’ পুলিশ জানায়, সোমবার ভোরে সোমনাথ প্রতিবেশীদের ডেকে জানান, সনিয়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সনিয়ার দেহ ঘরের মেঝেতে শোয়ানো ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিবেশীরা এসে দেখেন সনিয়ার দু’হাতে ক্ষত। রয়েছে পোড়া দাগ। গলায় শাড়ির ফাঁস। মুখেও আঘাতের চিহ্ন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সনিয়াকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ভাঙচুর চালান সোমনাথের দোকানেও। খবর পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার কাউন্সিলর অঞ্জন পাল।
তদন্তকারীরা জানান, রবিবার রাতে সনিয়াকে মারধরের পরে সোমনাথ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সনিয়ার হাতের আঘাতের চিকিৎসা করে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে মৃত্যু হয় সনিয়ার।
কাউন্সিলর অঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটির উপরে অনেক দিন ধরেই অত্যাচার চলছিল। আমরাও ব্যক্তিগত পর্যায়ে গিয়ে ছেলের বাড়িকে সাবধান করেছিলাম। এই ঘটনার কোনও ক্ষমা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy