বারো বছরের ছেলেকে শিক্ষকের কাছে দিয়ে ফেরার পথে এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। বুধবার সন্ধ্যায়, খড়দহ পাতুলিয়া শিবমন্দিরের ঘটনা। গভীর রাতে অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে অপরিচিত চার যুবকের মুখে রুমাল বাঁধা থাকায় তাদের চিনতে পারেননি বলে দাবি করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু সূত্র মিলেছে।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহিলাকে প্রাথমিক পরীক্ষায় নির্দিষ্ট ভাবে গণধর্ষণের চিহ্ন মেলেনি। তবে ঘটনার সময়ে তাঁর পরনে থাকা পোশাক ফরেন্সিক তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। শিবমন্দির এলাকার লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতি দিনের মতো বুধবার সন্ধ্যায় ছেলেকে শিক্ষকের কাছে দিতে গিয়েছিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী। সেখানে যাওয়ার পরে স্ত্রী থেকে গেলেও কাজে চলে যান স্বামী। কিছু ক্ষণ পরে বাড়ি ফিরছিলেন ওই মহিলা। অভিযোগ, রাস্তাতেই দুই যুবক টুপি পরে, মুখে রুমাল বেঁধে দাঁড়িয়েছিল। আচমকা এক জন পিছন থেকে মহিলার ঘাড় ধরে মুখে রুমাল চেপে ধরে। আর এক জন হাত দু’টি পিছন থেকে ধরে তাঁকে নিয়ে যায় রাস্তার ধারে একটি অর্ধসমাপ্ত বাড়ির সামনে।
গৃহবধূ পুলিশকে জানিয়েছেন, জায়গাটি ছিল নির্জন ও অন্ধকার। সেখানে আরও দুই যুবক মুখে রুমাল বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিল। চার জন মিলে ওই বধূকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। গৃহবধূ জানান, ঘটনার পরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে পাশে একটি বাড়ি গিয়ে সাহায্য যান। ওই মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা স্ত্রীকে গালিগালাজ করছিল। আমি বিজেপি কর্মী হওয়ায় আমাকেও প্রাণে মারার হুমকি দেয়।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি সরু গলির মতো জায়গায় রয়েছে অর্ধসমাপ্ত বাড়িটি। তার সামনে ঝোপ-জঙ্গল। তিন দিকে
রয়েছে অন্য বাড়ি। কিন্তু ঘটনার সময়ে কেন আশপাশের লোকজন কিছু টের পেলেন না, দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই গৃহবধূ প্রথম যে বাড়িতে সাহায্য চাইতে যান, তার বাসিন্দা কল্যাণ মিত্র বলেন, ‘‘অনেকক্ষণ ধরে দরজা ধাক্কার শব্দ শুনে খুলে দেখি, ওই মহিলা হাঁফাচ্ছেন। সাহায্য চেয়ে ঘরে ঢুকেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরলে ওঁর স্বামীকে খবর দিই।’’ ওই মহিলার স্বামী জানান, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি স্ত্রীকে নিয়ে
আসেন। রাত ১১টা নাগাদ দলের আর এক কর্মীর সহযোগিতায় অ্যাম্বুল্যান্স এনে স্ত্রীকে ভর্তি করান হাসপাতালে।