সোমবার দুপুরে বন্ডেল রোড ক্রসিংয়ের কাছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ডাউন লাইনের ধার থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ। প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল, ট্রেনের ধাক্কাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। কিন্তু ময়না-তদন্তে দেখা গেল, মৃতদেহের মাথায় রয়েছে বুলেটের ক্ষত।
ময়না-তদন্তে চিকিৎসকেরা মৃত্যুর কারণ না জানাতে পারলেও, ওই ব্যক্তির দেহে এবং মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন। তার মধ্যে মাথার একটি ক্ষত বুলেটের থেকে হয়েছে বলে ময়না-তদন্তকারীরা রেলপুলিশকে জানিয়েছেন। ময়না-তদন্তকারীদের মতে, মাথায় ও রকম ছিদ্র একমাত্র গুলিবিদ্ধ হলেই সম্ভব। কিন্তু মস্তিষ্ক থেকে কোনও বুলেট উদ্ধার হয়নি। ফলে মৃতদেহ উদ্ধারের পাঁচ দিন পরেও রহস্য কাটেনি।
রেলপুলিশ সূত্রের খবর, গত সোমবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ বালিগঞ্জ জিআরপি থানায় খবর আসে, বন্ডেল গেটের কাছে ডাউন লাইনের ধারে এক ব্যক্তির দেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দেখা যায়, ডাউন লাইনের ধারে রেললাইনের এক ফুটের মধ্যে ডান দিকে কাত হয়ে পড়ে রয়েছে দেহটি। মাথা এবং দেহের ডান দিকে আঘাত রয়েছে। মৃতদেহের পকেট থেকে উদ্ধার হয় একটি মোবাইল ফোন। সেই সূত্রেই পুলিশ জানতে পারে মৃত ব্যক্তির নাম দেবলাল মাহাতো (৫১)। পেশায় গাড়িচালক। আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হলেও দেবলাল ভাড়া থাকতেন হেস্টিংস থানা এলাকার ক্যানাল রোডের একটি বাড়িতে। সঙ্গে থাকতেন স্ত্রী এবং দুই ছেলে। দেবলালের ছেলে দিলীপ ওই ভাড়া বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে বালিগঞ্জ জিআরপি থানায় খুনের মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ জেনেছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ, ৩০ মে সকালে বাড়ির মালিকের সঙ্গে কোথাও যাচ্ছেন বলে বেরোন দেবলাল। দুপুরে দেহটি মেলে। পুলিশ জানায়, বাড়িওয়ালার মোবাইল ফোনটি তখন থেকেই বন্ধ।
রেলপুলিশ জানায়, দেহের বাইরের আঘাত দেখে মনে করা হয়েছিল ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে দেবলালের। কিন্তু ওই সময়ে ডাউন লাইন দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনের চালকেরা জানিয়ে দেন তাঁদের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগেনি কারও। ডাউন ডায়মন্ড হারবার লোকালের চালক বালিগঞ্জ স্টেশনকে জানিয়েছিলেন, তিনি একটি দেহ রেললাইনের ধারে পড়ে থাকতে দেখেছেন। এর পরেই ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে তদন্তকারীরা দেবলালের মাথায় ওই রহস্যজনক ছিদ্রের কথা জানতে পারেন। তাতেই উঠে আসছে খুনের আশঙ্কা।
রেলপুলিশ সূত্রে খবর, বাড়িওয়ালা তাঁদের ওই বাড়ি থেকে উঠে যেতে চাপ দিচ্ছিলেন বলে মৃতের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে বাড়িওয়ালা বেপাত্তা হওয়ায় পুলিশের সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘দেবলালের দেহে যে আঘাত রয়েছে, তা সাধারণত দ্রুত গতির ভারী কিছুতে আঘাত লাগলে তবেই হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy